ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইসরায়েলে জব্দ জাহাজ, মুক্তির দাবিতে উত্তাল ফ্রান্স!

প্রকাশিত: ১৮:২০, ১০ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৮:২৭, ১০ জুন ২০২৫

ইসরায়েলে জব্দ জাহাজ, মুক্তির দাবিতে উত্তাল ফ্রান্স!

গাজার দিকে ত্রাণ সরবরাহ করতে যাওয়া ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’-এর ‘মেডেলিন’ নামের জাহাজটি ঘিরে এখন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে পুরো বিশ্বে। গেলো সোমবার আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমা পাড়ি দিয়ে মিশরের কাছাকাছি পৌঁছালে জাহাজটি ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী কর্তৃক অপহৃত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই জাহাজে ছিলেন বিশ্বখ্যাত পরিবেশবাদী গ্রেটা থুনবার্গসহ মোট ১২ জন মানবাধিকারকর্মী। তাদের নিরাপত্তা নিয়ে তখনই শুরু হয় উৎকণ্ঠা। অবশেষে ইসরায়েলের আশদোদ বন্দর থেকে আটককৃতদের নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নেতানিয়াহুর প্রশাসন।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ (আগের টুইটার) জানায়, বন্দরে পৌঁছানোর পর সবাইকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং জীবিত থাকার প্রমাণস্বরূপ ছবি প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। আটককৃতদের বেন গুরিয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এনে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও জানানো হয়।

এদিকে, এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “গাজায় ত্রাণ সরবরাহের পথে একটি শান্তিপূর্ণ জাহাজ আটক করা অত্যন্ত লজ্জাজনক কাজ। সেখানে থাকা ছয়জন ফরাসি নাগরিকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তায় ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।” তিনি আরও বলেন, “গাজায় যে মানবিক সংকট ইসরায়েল তৈরি করেছে তা ভয়াবহ। যুদ্ধবিরোধী পদক্ষেপ দ্রুত কার্যকর হওয়া প্রয়োজন এবং এর জন্য সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে।”

অন্যদিকে, মেডেলিন জাহাজ আটকের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে প্যারিসের রাজপথ। হাজারো মানুষ ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে নেমে এসেছে বিক্ষোভে। হাতে প্ল্যাকার্ড, মুখে প্রতিবাদের স্লোগান—সব মিলিয়ে গোটা শহর যেন রূপ নিয়েছে এক প্রতিবাদী প্ল্যাটফর্মে।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, “গাজায় অবরোধ এবং মানবিক সহায়তা আটকে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ করছে। ১২ জন নিরীহ কর্মীকে আটকে রাখা, ট্রান্স সরবরাহ ঠেকানো এবং উপত্যকায় লাগাতার হামলা সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক আইনের কোনো তোয়াক্কা করছে না তারা।”

উল্লেখ্য, গাজার উপত্যকায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটে পড়েছে। শিশুরা না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে, মায়ের কোলে সন্তান মরছে। অথচ বিশ্বের বড় বড় শক্তিগুলোর নীরবতা ইসরায়েলকে আরও বেপরোয়া করে তুলেছে।

মানবিক সহায়তা নয়, যেন যুদ্ধক্ষেত্রেই পরিণত হয়েছে গাজা। আর এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝেও যারা শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, তাদেরকেও দমন করতে দ্বিধা করছে না দখলদার বাহিনী।

মিমিয়া

×