
ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র ঈদুল আজহার দিনেও ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন গাজা উপত্যকার লাখো মানুষ। ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের কারণে গাজাজুড়ে বিস্তৃত ধ্বংসস্তূপ, খাদ্য, পানি ও ওষুধের সংকট আর স্বজন হারানোর বেদনায় রক্তাক্ত এই দিনেও নেই ঈদের আনন্দ।
স্থানীয় গণমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, বহু পরিবারই ঈদের নামাজ পড়ার জায়গা পাননি, কেননা বহু মসজিদ ধ্বংস হয়ে গেছে আগের হামলায়। ঈদের দিনটিকে কেন্দ্র করে কোনো নতুন পোশাক বা শিশুদের হাসিমুখও দেখা যাচ্ছে না।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, এবছর ঈদুল আজহায় কোরবানির আয়োজন একেবারেই ক্ষীণ। গরু বা ছাগল কেনার সামর্থ্য যেমন কারও নেই, তেমনই নেই উপযুক্ত পরিবেশ। খাদ্যের অভাবে যেখানে শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে, সেখানে কোরবানি করা গাজাবাসীর কাছে এখন অবাস্তব এক বিলাসিতা।
ইসরায়েলের টানা হামলায় গাজার বহু অঞ্চল এখনো বিদ্যুৎ ও পানিশূন্য। ঈদের দিনে শিশুরা যেখানে নতুন জামা পরে খুশি হয়, সেখানে গাজার শিশুদের অনেকেই চিকিৎসাহীন অবস্থায় ধ্বংসস্তূপে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বহু পরিবার আবার এখনো শরণার্থী শিবিরে অস্থায়ীভাবে বাস করছে।
গাজার খান ইউনিস এলাকার বাসিন্দা ফারাহ আল-শাওয়া বলেন, “আমরা কীভাবে ঈদ উদযাপন করবো? আমাদের বাড়ি নেই, স্বজনরা অনেকেই নিহত, খাবার নেই, চারপাশ ধ্বংসস্তূপে ভরা। তবুও আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা রাখছি।”
জাতিসংঘসহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা গাজার ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ঈদ উপলক্ষে আরও সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু অবরোধ ও সংঘর্ষের কারণে বহু ত্রাণসামগ্রী এখনো গাজায় প্রবেশ করতে পারেনি।
পবিত্র ঈদুল আজহার দিনটি মুসলিমদের জন্য আত্মত্যাগ ও ত্যাগের প্রতীক হলেও গাজার মানুষের জন্য এটি যেন বেঁচে থাকার এক কঠিন সংগ্রামের দিন। ঈদের খুশির বদলে কান্না, শোক আর প্রতিদিনকার বাঁচার যুদ্ধই হয়ে উঠেছে গাজার বাস্তবতা।
ফারুক