আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি কারলোতে ফেয়ারগ্রিন শপিং সেন্টারে এক গুলিবর্ষণের ঘটনাকে “ভয়াবহ অভিজ্ঞতা” বলে উল্লেখ করেছে গার্দা (আইরিশ পুলিশ)।
রবিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটের পরপরই কারলো শহরের এই শপিং সেন্টারে গুলির শব্দ শুনে একাধিক ব্যক্তি গার্দা সদর দপ্তরে ফোন করে জানান।
পুলিশের ধারণা, একজন শ্বেতাঙ্গ আইরিশ যুবক (২০-এর কোঠায়) শপিং সেন্টারের ভেতর দিয়ে হাঁটার সময় একাধিকবার শটগান থেকে গুলি ছোড়ে।
পরে তাকে শপিং সেন্টারের বাইরে দেখা যায়, যেখানে সাদা পোশাকধারী সশস্ত্র পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন। গার্দা নিশ্চিত করেছে, ওই ব্যক্তি এরপর নিজেই নিজের অস্ত্রের গুলিতে আত্মহত্যা করেন।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে গার্দার অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পলা হিলম্যান জানান, গুলিতে কেউ আহত না হলেও ঘটনাস্থল থেকে পালাতে গিয়ে ছোট একটি মেয়ে হেঁচড়ে পড়ে সামান্য আঘাত পায়।
তিনি বলেন, “ছুটির দিনে এটি একটি স্বাভাবিক কেনাকাটার দিন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুহূর্তেই সেটি রূপ নেয় এক বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতায়।”
গার্দা জানিয়েছে, সন্দেহভাজনকে লক্ষ্য করে কোনো কর্মকর্তা গুলি চালাননি।
ঘটনার পর অভিযুক্তের দেহ ঘটনাস্থলে পড়ে থাকে এবং তা স্টেট প্যাথলজিস্ট অফিসে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে, যেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হবে।
অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার আরও জানান, “মৃত ব্যক্তির পরিবার শোকাহত। আমরা গণমাধ্যম এবং জনসাধারণকে অনুরোধ করবো যেন তারা পরিবারের গোপনীয়তা রক্ষা করেন।”
গার্দা কর্তৃপক্ষ সবাইকে অনুরোধ করেছে যেন সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনার কোনো ভিডিও বা ছবি শেয়ার না করা হয়।
রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৬টা ৩০ মিনিটের মধ্যে যারা ওই শপিং সেন্টারে উপস্থিত ছিলেন, তাদেরকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
অভিযুক্তের দেহ তল্লাশি করে একটি বোতল পাওয়া গেছে যাতে অজানা একটি রাসায়নিক দ্রব্য ছিল। এ কারণে কর্ক শহর থেকে আর্মি বোম্ব ডিসপোজাল টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে রাতেই এলাকা নিরাপদ ঘোষণা করে।
ফেয়ারগ্রিন শপিং সেন্টার ও এর পার্কিং এলাকা এখনো সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার হিলম্যান বলেন, “এই গুরুতর ঘটনার প্রতিটি দিক নিয়ে আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। আমি ফেয়ারগ্রিন শপিং সেন্টারের ম্যানেজমেন্ট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও জরুরি সেবার সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় গার্দা সদস্যদের তাৎক্ষণিক ও সাহসী পদক্ষেপের জন্য আমরা গর্বিত। তাদের কর্মদক্ষতা ছিল অনন্য।”
ঘটনার সামাজিক ও মানসিক প্রভাব বিবেচনা করে স্থানীয়দের পাশে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
রবিবার, আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী (Taoiseach) মিশেল মার্টিন ঘটনাটি নিয়ে গভীর শোক ও বিস্ময় প্রকাশ করেন।
Jahan
