
ছবি:X/@nyuniversity
মুম্বাইয়ের আকিল দাসওয়ানির বিদেশে পড়াশোনার পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে এবার এক অভূতপূর্ব চিত্র দেখা যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা তাদের আবেদনের তালিকায় একাধিক দেশ যোগ করছে। এ বছর মাত্র ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছে বলে জানান তিনি। গত বছর পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ভিসা সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্তকে এর প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী কমতে শুরু করেছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ সালে ১১ লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ৪৩ বিলিয়ন ডলার যোগ করেছিল।
মুম্বাইয়ের অ্যাডমিশন কনসালটেন্ট ভাইরাল দোশি বলেন, "ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার মতো প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর ২৫০০ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়, যার ১০ শতাংশই আন্তর্জাতিক। যদি প্রত্যেক শিক্ষার্থী বছরে ১ লাখ ডলার খরচ করে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়টি ২৫ মিলিয়ন ডলার আয় হারাবে।"
অভিভাবকদের মধ্যে নিরাপত্তা ও উচ্চ খরচ নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে। গত বছর ক্যাম্পাসে বন্দুক হামলা ও বর্ণবাদের ঘটনা অনেক ভারতীয় পরিবারকে চিন্তিত করে তুলেছে। "যারা যুক্তরাষ্ট্রের খরচ বহন করতে পারত, তারাও এখন বলে, 'ইউকে-তে পাঠালে রাতে ঘুম ভালো হবে'," বলেছেন দাসওয়ানি।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক অবস্থার ওপর এই পরিবর্তনের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামগুলো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কারণ আইন, ব্যবস্থাপনা বা আর্কিটেকচারের মতো কোর্সগুলো বিদেশি ফির ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনও শিক্ষার জন্য শীর্ষস্থানীয় গন্তব্য। শীর্ষ ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৮০টিই যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত। দাসওয়ানি বলেন, "বেশিরভাগ বিষয়ই সাময়িক। আমি এখনও মনে করি যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে ভালো শিক্ষা পাওয়া যায়।"
শিকাগোর এক বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র শীঘ্রই বুঝতে পারবে, এটি তাদের অর্থনীতির জন্য বুদ্ধিমানের সিদ্ধান্ত নয়।" তবে এখনই ভারতীয় পরিবারগুলো নিরাপদ ও কম খরচের বিকল্প খুঁজছে। ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও জার্মানিতে আবেদন বাড়ছে।
সূত্র: ThePrint, নিউ ইয়র্ক টাইমস
সাব্বির