দেশের বিভিন্ন জেলার মতো রাজধানী ঢাকাতেও আজ সারাদিন সূর্যের কোনো দেখা মেলেনি। সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি এখনো অবধি চলছেই। শুরুর দিকে হালকা-মাঝারি অবস্থা থাকলেও শেষ বিকালের ভারি বৃষ্টিতে ভাসছে নগরের বিভিন্ন এলাকায়। কোথাও কোথাও হাঁটুসমান পানিও উঠে গেছে। এতে বেশ ভোগান্তির স্বীকার হতে হয় ঘরমুখো চাকুরীজীবী সহ নানা কর্মক্ষেত্রের মানুষদের।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নিউমার্কেট ২ নং গেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, হকার্স মার্কেট, আজিমপুর, বাংলামোটর সহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় পানি জমে তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ব্যাপক ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে পথচারীদের।
দেখা যায়, টানা বৃষ্টিতে হকার্স মার্কেট ও নিউ সুপার মার্কেটের নিচে প্রায় হাঁটু পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। এতে দুশ্চিন্তার ছাপ পড়েছে ব্যাবসায়ীদের। তারা বলছেন, যদি সারারাত এমন চলতে থাকে তাহলে তাদেরকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। এ নিয়ে হকার্স মার্কেটের আসমা শাড়ির সত্বাধিকারী মো: সাজিদ বলেন, প্রতিবারই বৃষ্টির পানি নিয়ে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এটার সমাধান কেউ করে না বিগত সময়ে শুধু আশ্বাস দিয়েছে। আজ সারাদিন ব্যবসা হয়নি সামনে ইদ এ অবস্থা দেখে সন্ধ্যার পর কেউ কিনতে আসে নি।
পথচারী মুত্তাকিম আহমেদ বলেন, জুতা খুলে হাতে নিয়ে এই ময়লা পানি পেরিয়ে বাসায় যেতে হচ্ছে। রাস্তার এখানে সেখানে খানাখন্দ। কখন কোন বিপদ ঘটে সেই ভয়ে আছি।’
বৃষ্টির কারণে রাজধানীতে যানবাহনের চাপ কম। গণপরিবহন, রিকশা, সিএনজি এবং রাইড শেয়ারিং এর বাইক না থাকায় যাদের বাসা দূরে তাদের ঘরে ফেরা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
এদিকে রাস্তায় পরিমিত বাস না থাকায় এবং অনেকক্ষণ পর পর এক একটি বাস আসায় হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ঘরে ফেরা মানুষ। নারী এবং শিশুদের জন্য বাসে করে ঘরে ফেরা এক রকমের অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
এদিকে আজিমপুর বিজিবি ২ নং গেট সংলগ্ন এলাকায় পানি হাঁটুসমান হয়ে উঠেছে। এসময় কেউ রিকশাতে আবার কেউ ভ্যানগাড়িতে যে যেভাবে পারছেন সেভাবে পার হতে দেখা যায়। নিউমার্কেট ডাকঘর থেকে বীরশ্রেষ্ট আব্দুর রউফ স্কুল এন্ড কলেজ পর্যন্ত পার হতে গুনতে হচ্ছে জনপ্রতি ২০-৩০ টাকা।
বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায় ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনে এ ভোগান্তির কথা জানিয়ে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী নাইম ইসলাম বলেন, অল্প একটু বৃষ্টি হলে ক্যাম্পাসের মূল ফটক ডুবে যায়, হাঁটার মতো অবস্থা থাকে না। আগের দায়িত্বশীলরা তাদের দায়িত্বে অবেহলা করেছে আশা করি বর্তমানে যারা আছেন তারা বিষয়টি আমলে নিয়ে কাজ করবেন।
পানি অপসারণে সিটি কর্পোরেশনের পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করবে জানিয়ে এক সদস্য জানান, যেহেতু মার্কেট বন্ধ হয়ে গেছে আমরা আশা করছি রাতের মধ্যে পানি নেমে যাবে আমরা ইতোমধ্যে এ নিয়ে কাজ শুরু করেছি।
প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপটি ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও ঘূর্ণিঝড়ের কোনো আশঙ্কা নেই। তবে অতিভারি বর্ষণের আশঙ্কা এখনো রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রিফাত
