ছবি: প্রতীকী
বিদেশ থেকে দেশে ফিরছেন? সঙ্গে করে আনতে চাইছেন মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, বা টেলিভিশন? সরকারের হালনাগাদ ব্যাগেজ রুল অনুযায়ী এখন একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ১৯ ধরনের পণ্য শুল্ক ও কর ছাড়া আনতে পারবেন, যার মধ্যে রয়েছে মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি, ফ্রিজ, ক্যামেরা ও রান্নাবান্নার বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রী। পাশাপাশি আরও ১১টি পণ্য শুল্ক পরিশোধ করে আনার অনুমতি থাকছে। এসব পণ্যের ক্ষেত্রে ঋণপত্র বা এলসি খোলার প্রয়োজন হবে না।
বিদেশফেরত যাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের ব্যবহারের জন্য কিংবা পরিবারের সদস্যদের উপহার হিসেবে নানা পণ্য আনেন। সেই বিবেচনায় সরকার ‘ব্যাগেজ রুল’ নামক একটি আলাদা নীতিমালা চালু রেখেছে, যাতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ও পরিসরের মধ্যে পণ্য আনার অনুমতি দেওয়া হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। এবারের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটেও তেমন কিছু নতুন শর্ত সংযুক্ত হয়েছে।
বর্তমানে ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী একজন যাত্রী ৬৫ কেজি পর্যন্ত ওজনের ব্যাগেজ বিনা শুল্কে খালাস করতে পারবেন। ১২ বছরের নিচে হলে সেই সীমা ৪০ কেজি। এই ব্যাগেজের আওতায় যাত্রী আনতে পারবেন দুটি ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও প্রতিবছর একবার একটি নতুন মোবাইল ফোন, কোনো শুল্ক না দিয়েই। এ ছাড়া একজন যাত্রী আনতে পারবেন ২৯ ইঞ্চি পর্যন্ত টেলিভিশন, একটি ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ, কম্পিউটার প্রিন্টার বা স্ক্যানার, ডিজিটাল বা ভিডিও ক্যামেরা, সেলাই মেশিন, ব্লেন্ডার, রাইস কুকার, গ্যাস ওভেন, টোস্টার, ফুড প্রসেসর, কফি মেকার, জুসার, ব্যক্তিগত খেলার সামগ্রী, ১০০ গ্রাম ওজনের সোনার গয়না, এক কার্টন সিগারেট এবং মিউজিক সিস্টেম। এগুলো সবই আনতে পারবেন কোনো ধরনের শুল্ক ছাড়াই।
তবে কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক-কর দিতে হবে। যেমন—১১৭ গ্রাম বা প্রায় ১০ ভরি সোনার বার আনতে চাইলে প্রতি ভরির জন্য ৫ হাজার টাকা হারে শুল্ক দিতে হবে। এ ছাড়া রৌপ্যবার, ৩০ ইঞ্চির বেশি টিভি, হোম থিয়েটার, ফ্রিজ, ডিপ ফ্রিজ, এয়ারকন্ডিশনার, ডিশ অ্যানটেনা, এইচডি ক্যামেরা, ঝাড়বাতি, ওয়াশিং মেশিন, ক্লথ ড্রায়ার ও এয়ারগান আনলে নির্ধারিত হারে শুল্ক পরিশোধ করতে হবে, যার পরিমাণ ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন থেকে একজন যাত্রী বছরে সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম ওজনের সোনার গয়না বিনা শুল্কে আনতে পারবেন। আগে এই গয়না যতবার খুশি ততবার আনার সুযোগ ছিল। এবার তা বছরে একবারে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। একইভাবে সোনার বার আনার ক্ষেত্রেও আগে আনুষ্ঠানিক কোনো শর্ত না থাকলেও এখন বছরে সর্বোচ্চ একটি বার আনার অনুমতি থাকবে।
যাত্রীদের মাধ্যমে যেন বাণিজ্যিকভাবে পণ্য আনার প্রবণতা না বাড়ে, সেজন্যই ব্যাগেজ রুলে সময়ের প্রয়োজনে এই পরিবর্তন আনা হয়। তবে ব্যক্তি ও পারিবারিক ব্যবহারের জন্য স্বাভাবিক পরিসরের পণ্য আনার সুযোগ আগের মতোই রয়ে গেছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে ব্যাগেজ রুল সম্পর্কে আগে থেকেই জানা থাকলে বিমানবন্দর বা কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সে জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
রাকিব
