
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সৃষ্টি হয়েছে উত্তাল জনরোষ। ধর্মীয় উস্কানিমূলক বক্তব্য, বিতর্কিত মন্তব্য এবং উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তায় নামে সাধারণ মানুষ। এই বিক্ষোভের মধ্যেই সৃষ্টি হয় চরম উত্তেজনা—যার শেষ হয় জনতার গণধোলাইয়ে।
কি ঘটেছিল?
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ি আচমকাই ঢুকে পড়ে চলমান একটি বিক্ষোভে। সাথে সাথেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন আন্দোলনকারীরা। তার গাড়ি ঘিরে ধরে শুরু হয় বিক্ষোভ, এক পর্যায়ে চালানো হয় হামলা।
গাড়ি থেকে নেমে পরিস্থিতি শান্ত করতে চাইলেও কাজ হয়নি, বরং শুভেন্দু নিজেই পড়েন গণধোলাইয়ের শিকার। শেষমেশ গাড়ি ফেলে "চোরের মতো" পালিয়ে যেতে বাধ্য হন তিনি—এমনটাই দাবি করছেন আন্দোলনকারীরা।
পেছনের প্রেক্ষাপট কী?
শুভেন্দু অধিকারী এর আগেও বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য আলোচিত।
-
কাশ্মীরের পেহেলগাম ইস্যুতে এক বক্তব্যে তিনি বলেন, “২৬ জন হিন্দু মারা গেছে, আমরা চাই ২০৭ মুসলমানের লাশ।”
-
তার মতে, “গাজা শেষ, ইসরায়েল শেষ করেছে, আমরাও করবো।”
এই বক্তব্যগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাল হয়, যা নতুন করে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জনতার ক্ষোভের কারণ কী?
আন্দোলনকারীদের ভাষ্যমতে—
-
শুভেন্দু অধিকারী হিন্দু-মুসলিম বিভেদ সৃষ্টি করছেন।
-
ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে তিনি রাজনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন।
-
তার বক্তব্য ভারতের হিন্দু-মুসলিম সহাবস্থানে প্রভাব ফেলছে।
-
এমনকি পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনার পেছনেও তার ভূমিকা রয়েছে বলে অনেকের অভিযোগ।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা
যদিও বিজেপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘটনার বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি, তবে রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। শুভেন্দুর বক্তব্য ও তার সাম্প্রতিক গণধোলাইয়ের ঘটনায় বিজেপির ভাবমূর্তিও প্রশ্নের মুখে।
ভারতের মতো একটি বহুধারার রাষ্ট্রে ধর্মীয় সহাবস্থানে এমন বিতর্কিত বক্তব্য ও রাজনৈতিক উত্তেজনা সমাজকে বিভক্ত করে তুলতে পারে। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য এবং তার ফলাফল সমাজের সেই স্পষ্ট সংকেত উস্কানিমূলক রাজনীতির জবাব জনগণ কখনো কখনো রাস্তায়ই দিয়ে দেয়।
সায়মা