
ছবি:সংগৃহীত
ইউরো সম্ভবত ডলারের একটি কার্যকর বিকল্প হয়ে উঠতে পারে—এবং এর মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশাল লাভ হতে পারে—যদি সদস্য দেশগুলো একত্রিতভাবে আর্থিক ও নিরাপত্তা কাঠামোকে আরও জোরদার করে, বললেন ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন ল্যাগার্দে।
সোমবার বার্লিনে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নীতিতে অনিশ্চয়তার কারণে অনেক আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী ডলার নির্ভরতা কমিয়ে দিচ্ছেন। তবে তারা এখনো ইউরোর দিকে পুরোপুরি ফিরছেন না; বরং অনেকেই বিকল্প হিসেবে সোনার দিকে ঝুঁকছেন।
ল্যাগার্দে বলেন, “বর্তমান পরিবর্তনের সময়টাই ইউরোর জন্য ‘একটি বৈশ্বিক মুহূর্ত’ এনে দিতে পারে। তবে ইউরো নিজে থেকেই প্রভাবশালী হয়ে উঠবে না—এর জন্য তাকে যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে।”
এই লক্ষ্যে ইউরোপকে দরকার আরও গভীর এবং তরল পুঁজিবাজার, শক্তিশালী আইনগত কাঠামো এবং মুক্ত বাণিজ্যের প্রতিশ্রুতিকে নিরাপত্তা সহযোগিতার মাধ্যমে দৃঢ় করা, বলেন তিনি।
যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডলারের আন্তর্জাতিক ভূমিকা কমে এসেছে এবং বর্তমানে তা বৈশ্বিক রিজার্ভের ৫৮ শতাংশে নেমে এসেছে—যা বহু দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন—তবুও তা এখনো ইউরোর (২০ শতাংশ) চেয়ে অনেক বেশি।
ল্যাগার্দে আরও বলেন, ইউরোর ভূমিকা তখনই বাড়বে যখন ইউরোপ নিজেকে একটি বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তা অংশীদার হিসেবে প্রমাণ করতে পারবে, যার সামরিক সক্ষমতাও থাকবে। “কারণ বিনিয়োগকারীরা শুধু আর্থিক নিশ্চয়তা নয়, ভূরাজনৈতিক নিশ্চয়তাও খোঁজেন। তারা এমন অঞ্চলের সম্পদে বিনিয়োগ করেন যারা নির্ভরযোগ্য নিরাপত্তা অংশীদার এবং যাদের শক্ত সামরিক সক্ষমতা আছে।”
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ইউরোকে প্রধান মুদ্রা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন নতুন বাণিজ্য চুক্তি, উন্নত আন্তঃসীমান্ত অর্থপ্রদান ব্যবস্থা এবং ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে তারল্য সহযোগিতা।
তবে সবকিছুর আগে ইউরোপের অভ্যন্তরীণ আর্থিক সংস্কারই সবচেয়ে জরুরি, বললেন ল্যাগার্দে। কারণ ইউরোজোনের পুঁজিবাজার এখনো খণ্ডিত, অকার্যকর এবং এমন কোনো নিরাপদ ও তরল সম্পদ নেই যেটি বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় হতে পারে।
তিনি বলেন, “অর্থনৈতিক যুক্তি বলে, যেসব জিনিস সবাই ব্যবহার করে, সেগুলোর জন্য সম্মিলিতভাবে অর্থায়ন দরকার। আর এই যৌথ অর্থায়নের ভিত্তিতেই ইউরোপ ধীরে ধীরে নিরাপদ সম্পদের জোগান বাড়াতে পারবে।”
মারিয়া