ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কেন চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের যৌথ হামলার ভয়ে আছেন মোদি?

প্রকাশিত: ১৯:০১, ১৮ মে ২০২৫

কেন চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের যৌথ হামলার ভয়ে আছেন মোদি?

ছবি: সংগৃহীত

শনিবার সকালে একযোগে ভারতীয় প্রধান তিনটি সংবাদপত্র—টাইমস অফ ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু, ও হিন্দুস্তান টাইমস প্রকাশ করলো একটি অভিন্ন ও বিস্ফোরক প্রতিবেদন: "বাংলাদেশের লালমনিরহাটে পিপলস লিবারেশন আর্মির সহায়তায় তৈরি হচ্ছে চীনা সামরিক বিমানঘাঁটি"।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পুরনো রানওয়ের ওপর গড়ে উঠছে একটি আধুনিক এয়ার ডিফেন্স অবকাঠামো। যেখানে চীনা রাডার প্রযুক্তি, স্যাটেলাইট কানেক্টিভিটি, ড্রোন ম্যানেজমেন্ট ইউনিট এবং প্যাসিভ সারভেইলেন্স সিস্টেম বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আকাশসীমা নজরদারিতে আনা সম্ভব—এমনটাই দাবি করেছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট সূত্র।

টাইমস অফ ইন্ডিয়া একে বলছে "উইথ হাই গ্রেড ইন্টেলিজেন্স ইনপুট", যা অনেকটাই স্পষ্ট করে দেয় যে রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (RAW) নিজেই এই তথ্য ফাঁসের পেছনে থাকতে পারে। আর্টিকেলে উল্লেখ করা হয়, লালমনিরহাটের সম্ভাব্য ঘাঁটি পাকিস্তানের স্কার্দু ও চীনের হোতান এয়ারবেসের সঙ্গে মিলে গঠিত করছে এক ত্রিমাত্রিক এয়ার শিল্ড, যা ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ঘিরে ফেলবে বলেই আশঙ্কা।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনুস, বারবার বলছেন দেশ কোনো বলয়ে যাচ্ছে না। কিন্তু ভারতীয় মিডিয়ার দাবি, একইসঙ্গে তিনি চীন, ভারত, আমেরিকা ও রাশিয়ার সঙ্গে গোপন বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন। এই অবস্থানকে এখন "জিও-স্ট্রাটেজিক নিউট্রাল পুল" বলা হচ্ছে—যেখানে সবাই আছে, কিন্তু কেউই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেই।

তবে প্রশ্ন হচ্ছে, এই নিরপেক্ষ কৌশল আদৌ কি দীর্ঘস্থায়ী হবে? ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের আশঙ্কা, যদি লালমনিরহাট সত্যিই একটি কার্যকর পিএলএ ঘাঁটিতে রূপ নেয়, তবে তা ভারতের জন্য "হার্ট অ্যাটাকের" সমান।

জবাবে ভারত উত্তর-পূর্ব সীমান্তজুড়ে গড়ে তুলছে ইন্টিগ্রেটেড ব্যাটালিয়ন হাব। অরুণাচল, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা সীমান্তে জোরদার সামরিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গ ও আসামের সঙ্গে সংযুক্ত সীমান্তেও ঢুকেছে র-এর কয়েকটি বিশেষ অপারেশন ইউনিট।

ভারতের লক্ষ্য বাংলাদেশকে আবার তাদের “প্রাকৃতিক বাফার স্টেট”-এ রূপান্তর করা। কিন্তু ইউনুসের সরকার এই রূপরেখায় হাঁটছে না। বরং ফরেন পলিসিতে দেখাচ্ছে এক স্বাধীন ও ভারসাম্যপূর্ণ পথচলা।

একজন ভারতীয় সামরিক বিশ্লেষক স্পষ্টতই বলেন, “যুদ্ধ আর কেবল ভূখণ্ডে নয়, তা এখন শুরু হয় আকাশে। আর আকাশ হারালে ভূখণ্ড রক্ষা করা অসম্ভব।”

বিশ্বের দৃষ্টি এখন ইউক্রেন, তাইওয়ান এবং মধ্যপ্রাচ্যের ওপর। সেই সুযোগেই দক্ষিণ এশিয়ায় জন্ম নিচ্ছে এক নতুন প্রতিরোধ বলয়। ঢাকা, বেইজিং ও ইসলামাবাদের মধ্যকার নীরব কিন্তু স্পষ্ট সমন্বয় হয়তো দক্ষিণ এশিয়াকে ঠেলে দিচ্ছে "রেডস্টার ঘাঁটি"-নির্ভর ভবিষ্যতের দিকে।

প্রশ্ন আর নেই যে বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান সমন্বিত একটি শক্তি উঠে আসছে। এখন কেবল প্রশ্ন—কবে এবং কত দ্রুত তারা বসবে দক্ষিণ এশিয়ার নিয়ন্ত্রণের আসনে?

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=NW32pG8IfX8

নুসরাত

×