ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কেন পাক প্রধানমন্ত্রী ‘রক্ত ও পানি একসাথে প্রবাহিত হতে পারে না’ বললেন

প্রকাশিত: ১৫:২৪, ১৫ মে ২০২৫

কেন পাক প্রধানমন্ত্রী ‘রক্ত ও পানি একসাথে প্রবাহিত হতে পারে না’ বললেন

ছ‌বি: সংগৃহীত

 

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বীরোচিত প্রতিরক্ষার প্রশংসা করে বলেছেন, শত্রুপক্ষ সংখ্যায় এগিয়ে ছিল এবং বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে অহংকার করছিল, কিন্তু আল্লাহর অশেষ কৃপায় পাকিস্তানের সেনারা সেই অহংকার মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।

সিয়ালকোট-পাসরুরের সামনের প্রতিরক্ষা চৌকিতে অবস্থানরত অফিসার ও সৈনিকদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে শাহবাজ বলেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে অত্যন্ত গর্ব করতেন, অথচ সেগুলোই আল্লাহর রহমতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ধ্বংস করে দিয়েছে।

সেনাদের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, তারা শত্রুর শক্তিকে ভেঙে দিয়েছে। তিনি জানান, কোর কমান্ডার তাকে ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে প্রতিরক্ষা চৌকিগুলোর রক্ষা হয়েছে, এবং কীভাবে শত্রুকে এগিয়ে আসতে দেওয়া হয়নি। স্থলভাগে শত্রু টার্গেট ধ্বংস করা ও বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে শত্রুপক্ষের বিমান ভূপাতিত করার ঘটনাকে তিনি অসাধারণ কীর্তি হিসেবে বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, এখন শত্রু ও মিত্র উভয়ই স্বীকার করছে—ভারত পাকিস্তানের পিছনে পড়ে গেছে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক যুদ্ধ প্রমাণ করেছে যে, প্রচলিত যুদ্ধে পাকিস্তানের শক্তি কতটা দৃঢ়। এই সংঘর্ষের কৌশলগত পরিচালনা ভবিষ্যতে গবেষণাপত্র ও বইয়ে আলোচনার বিষয় হবে।

তিনি যৌথ বাহিনী প্রধান জেনারেল সাহির শামশাদ, সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জহির বাবর ও নৌবাহিনী প্রধান নাভিদ আশরাফসহ সকল সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন, ২৪ কোটি পাকিস্তানির পক্ষ থেকে তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন।

বিশেষভাবে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করে শাহবাজ বলেন, তিনি স্বয়ং যুদ্ধকালীন পরিকল্পনা ও সমন্বয় প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, “জেনারেল আসিম জাতির একজন সাহসী সন্তান। আমি তার ওপর গর্বিত।”

এয়ার চিফ মার্শাল জহির বাবর পূর্বে বিমানবাহিনীর সক্ষমতার কথা বললেও ৯ ও ১০ তারিখে সেই ক্ষমতার বাস্তব রূপ দেখেছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি তিন বাহিনী প্রধানকে ‘জাতির তারকা’ হিসেবে অভিহিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের কৌশলে কোনও দুর্বলতা দেখেননি তিনি। “শত্রু যখন অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে, তখন তারা আমার অনুমতি চায় প্রতিআক্রমণের। এসব কিছু আমি অবসর নেওয়ার পর আমার বইয়ে বিস্তারিতভাবে লিখব,” বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ৯ ও ১০ মে’র ঘটনাবলি ভারতের মিত্রদের কাঁপিয়ে দিয়েছে এবং পাকিস্তানের বন্ধুদের মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছে। “যে সাফল্য আমরা অর্জন করেছি, তা যেন স্বপ্ন বা গল্পের মতোই মনে হয়।”

তিনি দাবি করেন, এই সংঘাতের মাধ্যমে পাকিস্তান ১৯৭১ সালের যুদ্ধের প্রতিশোধ নিয়েছে। তিনি বলেন, এই অভিযানের নাম ছিল “অপারেশন বুনিয়ান উন মারসুস”।

তিনি ভারতকে সতর্ক করে বলেন, যদি তারা সিন্ধু পানি চুক্তি বাতিল বা পানির প্রবাহ বন্ধ করার চিন্তা করে, তাহলে “রক্ত ও পানি একসাথে প্রবাহিত হতে পারে না।” তিনি অঙ্গীকার করেন, পাকিস্তানের সাহসী সৈন্যরা তাদের পানির অধিকার নিশ্চিত করবে সাহস ও সংকল্পের সাথে।

তিনি মোদিকে প্রশ্ন করেন—১৯৭১ সালে মুক্তিবাহিনীকে কে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল? সমঝোতা এক্সপ্রেসে হামলা কে করেছিল? এবং সম্প্রতি বেলুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস ট্র্যাজেডিতে ভারতের সংশ্লিষ্টতা নিয়েও তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি ভারতের গুপ্তচর কুলভূষণ যাদবের প্রসঙ্গও তোলেন।

 

সূত্র: https://en.dailypakistan.com.pk/14-May-2025/pm-lauds-pakistan-armed-forces-for-heroic-defence-warns-india-against-aggression

এএইচএ

×