ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হলো যাত্রীকে

প্রকাশিত: ২১:০১, ১৮ অক্টোবর ২০২২

চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হলো যাত্রীকে

ধাক্কা মেরে ট্রেন থেকে ফেলে দেন

চলন্ত ট্রেনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল দুই যাত্রীর। একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। হঠাৎ একজনকে ধাক্কা মেরে ট্রেন থেকে ফেলে দেন আরেক যাত্রী। এমন ভয়াবহ ঘটনার পরও কোনো বিকার নেই সেই লোকের। হেলেদুলে নিজের আসনে গিয়ে বসেন তিনি। সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া-মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসে।

গত শনিবার ওই ট্রেনের এক যাত্রী বিবদমান দুই সহযাত্রীর গোটা গোলমাল পর্বের প্রত্যক্ষদর্শী। হাতাহাতি ও ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা তিনিই মোবাইলে ভিডিও করেন।

তার কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে, এদিন বিকেলে হাওড়া-মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস তারাপীঠ রোড স্টেশন থেকে রামপুরহাটের দিকে যাওয়ার সময় দুই যাত্রীর মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, দু’জনের মধ্যে হাতাহাতির সময় চেকশার্ট পরা এক ব্যক্তি তুলনায় কমবয়সী এক যুবককে ট্রেনের দরজা দিয়ে ধাক্কা মেরে ফেলে দিচ্ছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, শারীরিক প্রতিবন্ধী ওই প্রত্যক্ষদর্শী গোটা ঘটনার ভিডিও করলেও তিনি সম্ভবত ভাবতে পারেননি, এভাবে একজন আরেকজনকে ট্রেন থেকে ফেলে দেবেন। ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রী মুরারই স্টেশনে নামেন। এরপর স্থানীয় থানায় গিয়ে ভিডিওটি দেখিয়ে পুলিশকে জানান। সঙ্গে সঙ্গে রামপুরহাট রেল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুরারই থানা।

রামপুরহাটের কাছেই রেললাইন থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করেছে রেল পুলিশ। চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর জখম হয়েছেন তিনি। তাকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, আহত ওই যুবকের নাম সজল শেখ। রামপুরহাট থানার সন্ধিপুর এলাকার বাসিন্দা এই যুবকের নামে রামপুরহাট থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। ট্রেনে সহযাত্রীর সঙ্গে গোলমালের সময় সজল মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।

এনডিটিভি জানিয়েছে, সেদিন সজল শেখ অন্য যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছিলেন ও হুমকি দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, সজল অন্য যাত্রীদের সিটে পা রেখে ফোনে কথা বলছিলেন।

তবে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া ওই যুবক দাবি করেছেন, অন্য যাত্রীদের সঙ্গে হওয়া দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করার কারণেই তার এই দুদর্শা হয়েছিল।

সজল বলেন, আমি বাড়ি যাচ্ছিলাম। ট্রেনের বগিতে তিন-চারজন বসে নিজেদের মধ্যে গল্প করছিল। তারা অশালীন কথাবার্তা বলছিল। এসময় পাশে একটি পরিবারও বসেছিল। তাই আমি তাদের এমন আচরণ না করার জন্য বলতে গিয়েছিলাম। এটাই আমার ভুল ছিল।

তিনি বলেন, তাদের মধ্যে একজন উঠে এসে আমার কলার ধরে ও হুমকি দেয়। আমি তাকে ভয় দেখানোর জন্য পকেট থেকে একটি ব্লেড বের করেছিলাম। পরে যা জানি তা হলো, আমি রেললাইনে। বুঝতে পারিনি হঠাৎ কীভাবে এটা হয়ে গেলো। আমি কিছুক্ষণের জন্য অজ্ঞান ছিলাম। যখন জ্ঞান ফিরলো, দেখলাম, রেললাইনে শুয়ে আছি। ব্যথায় আমার হাত, পা, মাথা সবই অসাড় হয়ে গেছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে গ্রেফতার করেছে রেল পুলিশ। তবে এর সঙ্গে আরও লোক জড়িত বলে ধারণা করছেন কর্মকর্তারা। ঘটনার তদন্ত চলছে।

 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×