ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিডনিতে পহেলা বৈশাখে দেবীপক্ষ আয়োজিত বাঙালির ভুড়িভোজ 

প্রকাশিত: ১৯:২১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

সিডনিতে পহেলা বৈশাখে দেবীপক্ষ আয়োজিত বাঙালির ভুড়িভোজ 

অতিথিদের সঙ্গে দেবীপক্ষের কর্নধার জুঁই সেন পাল।

পহেলা বৈশাখে সিডনির মিন্টোস্থ রনমোর কমিউনিটি সেন্টারে ‘বাঙালির ভুড়িভোজ’ এর আয়োজন করা হয়। রবিবার (১৪ এপ্রিল) দেবীপক্ষের কর্নধার জুঁই সেন পাল ও তার টীমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই আয়োজন সম্পন্ন হয়।
  
বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার খাবার পরিবেশনে আগত অতিথিদের আপ্যায়ন করাই ছিল বাঙালির ভুড়িভোজ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। ভুড়িভোজে প্রায় ৬৪টি জেলার অধিবাসীরা তাদের নিজ নিজ অঞ্চলের উপাদেয় খাবার নিয়ে আসার পাশাপাশি অন্য অঞ্চলের খাবারের স্বাদ গ্রহণ করার সুযোগ পায়। অপরিচিতদের সাথে বন্ধু হয়ে ওঠা ও নিজস্ব গল্প ভাগ করে নেয়ার সুযোগও তৈরি করে। কানিতাজ ইভেন্ট সল্যূশনস্ এর সাজসজ্জায় ছিল গ্রামীণ আদলে বানানো ফটোবুথ, তালগাছ, বাবুই পাখির বাসা, বাছুর,খড়ের গাদা, কুঁড়েঘর, ঢেঁকি, কুয়া, নদী, ঘাটে বাঁধানো নৌকো, মাটির পাত্র, মেঠো পথ। সঙ্গে ছিল ৩৬০ ডিগ্রী ক্যামেরায় ছবি তোলা ও ভিডিও করার সুযোগ।বিকেল ৫টায় জুঁই সেন পালের পরিচালনায় মঙ্গল শোভাযাত্রার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতে ছোট্ট শিশু ফ্লোরা সেন পাল কান্ট্রি অফ একনলেজমেন্ট পাঠ এবং অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে। মঞ্জুশ্রী মিতা ও শাহরীন রলির উপস্থাপনায় সমবেত কণ্ঠে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ গেয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ে হয়। ছোট্ট শিশু শিল্পীদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন গামা আব্দুল কাদির, মো. শফিকুল আলম ও পূরবী পারমিতা বোস।গান পরিবেশন করে প্রিতিশা, সুবর্ণা তালুকদার, মারিয়া মুন। নৃত্য পরিবেশনায় ছিল আনিশা, আদ্রিতা, কলাংক ড্যান্স একাডেমি, শ্রেয়সীদাস ও নটরাজ ড্যান্স একাডেমি। বাংলা গানের সঙ্গে বিশেষ নাচে অংশগ্রহণ করে চারজন অস্ট্রেলিয়ান কিশোরী অন্বেষা, ইন্দিরা, এলা ও সামান্তা। রম্য নাটকে অংশ নেয় পলি ফরহাদ ও ফাইজুল আজিম চঞ্চল। ছিল শিশুদের ও বড়দের দুটো মনোমুগ্ধকর ফ্যাশন শো।ছোটদের ফ্যাশন শো’তে অংশ নেয় রাইমা রায়, অর্থদত্ত, আনিশা হালদার, প্রীতিশা হালদার, আয়ুশ সাহা, ফ্লোরাপাল, সম্প্রীতি বড়ুয়া চিত্রা এবং আরিশ দেব। বড়দের মধ্যে অংশ নেয় জুঁই সেন পাল, অন্তরা ঐতী, মুনিরা সাথী, অরুনিমা কুন্ডু, সঞ্চিতা বিশ্বাস এবং শুভ্রা শিকদার।

অনুষ্ঠানে আমাদের কথার প্রেসিডেন্ট পূরবী পারমিতা বোস এবং ফাগুন হাওয়ার সভাপতি তিশা তানিয়াকে বাংলা কমিউনিটির প্রসারে অনবদ্য কাজের জন্য সম্মননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা, উত্তরীয় ও ক্রেস্ট তুলে দেন ক্যাম্পবেল টাউন কাউন্সিলের কাউন্সিলর ডারসি লাউন্ড। অনুষ্ঠানের মূল স্পনসর আফরীনা স্মৃতি, কিশোয়ার আক্তার কাকলি, প্যারামাউন্ট বিল্ডার্স এবং ড্রীম কী রিয়েল এস্টেটকে  বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট ও উত্তরীয় দেয়া হয়। 

সম্মাননা দিতে মঞ্চে ছিলেন- কাম্বারল্যান্ড কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র সুমন সাহা, ক্যাম্পবেল টাউন কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র ইব্রাহীম খলিল মাসুদ, কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরী এবং কাউন্সিলর ডারসি লাউন্ড।  

অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ৬৪ জেলার রান্নার মধ্যে তিনটি জেলার রাঁধুনিদের পুরস্কৃত করা হয়। তৃতীয়, দ্বিতীয় ও যুগ্ম ভাবে প্রথম পুরস্কার গ্রহণ করেন, তৃতীয় কানিজ ফাতেমা সানী (চ্যাপা পুলি/ময়মনসিংহ), দ্বিতীয় ফারাহানা ইয়াসমীন (পান্তুয়া/ফেনী) ও যুগ্মভাবে প্রথম উর্মী তালুকদার (চিংড়ী মালাইকারী/ঢাকা) ও জয়শ্রী মন্ডল (কই মাছের পাতুরী/ফরিদপুর)। দেবীপক্ষের কর্ণধার এবং অনুষ্ঠানের আয়োজক সৌরভ পাল, জুঁই সেন পাল সহ পুরষ্কার প্রদানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পূরবী পারমিতা বোস, তিশা তানিয়া, কামাল পাশা ও আশিকুর রহমান অ্যাশ।

ফটোগ্রাফীতে ছিলেন আকাশ দে আকাশ, সাউন্ডে সঞ্জয় টাবু। সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন দেবীপক্ষের সৈকত পাল এবং নন্দিতা পাল। জুঁই সেন পাল ও সৌরভ পাল সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে আগামী বছর ভূড়িভোজের অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

এম হাসান

×