ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সিনিয়র হামাস নেতার সাক্ষাৎকার

মাথা নোয়াবো না, যুদ্ধ বন্ধ চাই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:১৮, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

মাথা নোয়াবো না, যুদ্ধ বন্ধ চাই

সামি আবু জুহরি

ইসরাইলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধ বন্ধে রাজি হামাস। তবে সংগঠনটি মার্কিন চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। রবিবার সংগঠনটির সিনিয়র নেতা সামি আবু জুহরি এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানান। তিনি বলেন, মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তার সংগঠন ইসরাইলের পক্ষ থেকে পাঠানো একটি প্রস্তাব হাতে পেয়েছে এবং সেটি পর্যালোচনা করে দেখছে। তিনি বলেন, দখলদারদের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাব আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি, তবে এ ব্যাপারে আমাদের জবাব দিতে দেরি হবে। এই হামাস নেতা বলেন, গাজায় ইসরাইলি দখলদারদের আগ্রাসন বন্ধ না হয় এমন কোনো চুক্তি প্রতিরোধ আন্দোলন মেনে নেবে না। খবর আলজাজিরা অনলাইনের। 

তিনি আরও বলেন, আমরা মিসর ও কাতারকে জানিয়ে দিয়েছি, আমরা চুক্তিতে পৌঁছাতে চাই; কিন্তু এক্ষেত্রে মার্কিন চাপের বিন্দুমাত্র মূল্য আমাদের কাছে নেই। এর একদিন আগে হামাসের উপপ্রধান খলিল আল-হাইয়্যা জানান, তারা মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও পণবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে ইসরাইলের একটি প্রস্তাব হাতে পেয়েছেন।
এর আগে হামাসের রাজনৈতিক শাখার ইস্তানবুলভিত্তিক সদস্য বাসেম নাইম এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে হামাস অস্ত্র সমর্পণ করবে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরাইলের দখল করা অঞ্চলগুলোতে ফিলিস্তিনিরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেলে হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ছেড়ে দিতে পারে। সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটির কিছু কর্মকর্তার দেওয়া এই বার্তাটি হামাসের অবস্থান কিছুটা নরম হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কারণ গাজা ভূখ-ের শাসন ক্ষমতায় থাকা এই দলটি দীর্ঘদিন ধরে ইহুদি রাষ্ট্র তথা ইসরাইলকে ধ্বংস করার আহ্বান জানিয়ে আসছে। বাসেম নাইম বলেন, একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি নিজেদেরকে নিরস্ত্র করতে রাজি হবে। হামাসের সশস্ত্র শাখার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের অধিকার সংরক্ষণের পাশাপাশি যদি জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাহলে আল কাসামকে (ভবিষ্যৎ) জাতীয় সেনাবাহিনীতে একীভূত করা যেতে পারে। হামাস ঐতিহ্যগতভাবে একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। এই সমাধান নীতি অনুযায়ী, ইসরাইলের পাশাপাশি একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকবে। 
বরং এর পরিবর্তে হামাস এতদিন সমস্ত ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে কথা বলেছে। প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভের প্রেসিডেন্ট মোস্তফা বারঘৌতি বলেন, তিনি হামাসের অস্ত্র সমর্পণের প্রস্তাব সম্পর্কে আগে থেকে অবগত নন। তবে তিনি বলেন, এটি সত্য হলে তা হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

তিনি ১৯৬৭ সালে দখল করা ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোতে ইসরাইলের সামরিক নিয়ন্ত্রণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা এই অর্থে গুরুত্বপূর্ণ যে, ফিলিস্তিনিরা দখলদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করছে কারণ এখানে দখলদারিত্ব চলছে। যদি কোনো ধরনের দখলদারিত্ব সেখানে না থাকে, তবে তাদের প্রতিরোধ করারও দরকার নেই। মূলত ১৯৬৭ সালে দখল করা ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোতে এখনো লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাস করেন। যদিও এসব এলাকায় ইসরাইলের সামরিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

×