ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাহুল গান্ধীকে এমপি পদের অযোগ্য ঘোষণার প্রতিবাদ

ভারতজুড়ে কংগ্রেসের বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:১৮, ২৭ মার্চ ২০২৩

ভারতজুড়ে কংগ্রেসের বিক্ষোভ

রাহুল গান্ধীকে এমপি পদের অযোগ্য ঘোষণার প্রতিবাদে কংগ্রেস এমপি ও নেতাকর্মীরা সোমবার দিল্লির বিজয় চক অভিমুখে কালো পোশাক পরে বিক্ষোভ করে

ভারতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে এমপি পদ থেকে অযোগ্য ঘোষণার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করছে তার কর্মী-সমর্থকরা। মানহানির মামলায় দুই বছরের কারাদ-ের পর গত সপ্তাহে রাহুলকে এমপি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে একটি নির্বাচনী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বংশীয় পদবি নিয়ে মন্তব্যের জন্য গুজরাটের একটি আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে। কংগ্রেস এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সমালোচনা করেছে।

তবে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, সংসদীয় নিয়মেই বহিষ্কার হয়েছেন রাহুল। কংগ্রেসের কয়েকশ’ নেতা দ্বিতীয় দিনের মতো সোমবার দিল্লিতে রাহুলের অযোগ্যতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। হিমাচল, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং গুজরাট রাজ্যেও বিক্ষোভ সমাবেশ করছেল দলীয় কর্মীরা। -খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া/এনডিটিভির।
দিল্লিতে বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতা সংসদ চত্বরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে যোগ দেন। গত সপ্তাহে রাহুলকে অযোগ্য ঘোষণার পর থেকে তাদের মধ্যে অনেকেই সংসদের নিম্নকক্ষ- লোকসভার প্রথম অধিবেশনে কালো পোশাক পরেছিলেন। পার্লামেন্টের ভেতরও বিক্ষোভ হয়েছে। এর ফলে দিনের বেলা বেশ কয়েক দফা অধিবেশন স্থগিত করা হয়। অধিবেশনের আগে কংগ্রেস এমপি প্রমোদ তিওয়ারি ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ভিন্নমতকে দমিয়ে রাখার জন্য অভিযোগ তোলেন।
তিওয়ারি বলেন, ‘যখন আমরা সংসদে কথা বলি, তারা তখন কার্যক্রম চালাতে দেয় না। আমরা যখন বাইরে কথা বলি, তারা দলের নেতাদের অযোগ্য ঘোষণা করে দেয়।’
রাহুল গান্ধী দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরলের ওয়ানাদ থেকে কংগ্রেস পার্টির এমপি ছিলেন। ৫২ বছর বয়সী এই নেতা নেহরু-গান্ধী পরিবারের সদস্য। এ পরিবার থেকে তিনজন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছে ভারত। দেশটির আগামী নির্বাচন যখন দরজায় কড়া নাড়ছে, ঠিক তখনই রাহুলকে অযোগ্য ঘোষণা করে লোকসভা। আদালত রাহুলকে ৩০ দিনের জন্য জামিন দিয়েছে। রাহুলের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন তারা।

রাহুল তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করলেও তার সমর্থকরা বলছেন, নেতার এই অযোগ্যতা ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ার লক্ষণ। রাহুলের বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী রবিবার বলেছিলেন, তার ভাইকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে কারণ তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গৌতম আদানির সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। 
কালো পোশাকে বিক্ষোভ পার্লামেন্টে ॥ বিরোধী ঐক্যের প্রায় বিরল ছবি দেখা গেল সংসদে। সাময়িক দূরত্ব সরিয়ে কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে যোগ দিল তৃণমূল। রাহুল গান্ধীর সংসদ সদস্য পদ খারিজের প্রতিবাদে কংগ্রেস সংসদ সদস্যরা কালো পোশাক পরে যে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন, তাতে যোগ দিল স্থানীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের ‘বিরোধী’ তেলেঙ্গানার ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-ও। তৃণমূল এবং বিআরএসের উপস্থিতিতে বিরোধী ঐক্যের বৃত্তটি সম্পূর্ণ হলো বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খ—েগ বিরোধী বৈঠকে তৃণমূলের উপস্থিতিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তার কথায়,  ‘দেশে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে যারাই এগিয়ে আসবেন, কংগ্রেস তাদের স্বাগত জানাবে।’
বিরোধী বৈঠকে তৃণমূলের পাশাপাশি যোগ দিয়েছিল ডিএমকে, এসপি, জেডি (ইউ), সিপিএম, আরজেডি, এনসিপি, সিপিআইসহ ১৭টি বিরোধী দল। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অতীতে একাধিকবার সরব হলেও আদানি সংক্রান্ত বিক্ষোভ কংগ্রেসের সঙ্গেই কক্ষ সমন্বয় করতে দেখা যায় আপকে। তবে কংগ্রেসের যাবতীয় কর্মসূচি থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিল তৃণমূল।

সাগরদীঘি বিধানসভার উপনির্বাচনে পরাজয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কংগ্রেস, বাম এবং বিজেপির বিরুদ্ধে অশুভ আঁতাত করার অভিযোগ তুলেছিলেন। রাহুলের সদস্যপদ খারিজের পর অবশ্য টুইট করে নাম না করে কংগ্রেস নেতার পাশে দাঁড়ান মমতা। সোমবার কংগ্রেসের ডাকা বিরোধী বৈঠকে তৃণমূলের তরফে যোগ দেন রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার এবং হাওড়ার তৃণমূল সংসদ সদস্য।

×