
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ব চলচ্চিত্রের জগতে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের ২০০২ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথম উপস্থিতি ছিল একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত। এটি ছিল শুধুই একটি রেড কার্পেট প্রদর্শনী নয়। এটি ছিল একটি সাংস্কৃতিক মাইলফলক।
‘দেবদাস’ ছবির সহশিল্পী শাহরুখ খান ও পরিচালক সঞ্জয় লীলা ভানসালির সঙ্গে ঐশ্বরিয়া অংশ নিয়েছিলেন ঐ বছর। এই উৎসবেই ‘দেবদাস’ ছবির জাঁকজমকপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হয়, যা বিশ্বদর্শকদের কাছে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এক আবেগঘন, রাজকীয় রূপান্তর তুলে ধরে।
ঐশ্বরিয়ার প্রবেশ ছিল অভাবনীয়। একটি ঘোড়ার রথে চড়ে যখন তিনি রেড কার্পেটে হাজির হন, তখন শুরু হয় এক আইকনিক অধ্যায়ের। নীতা লুল্লার ডিজাইন করা একটি উজ্জ্বল হলুদ শাড়িতে ঐশ্বরিয়া ছিলেন একেবারে রাজকীয়, মুখে হালকা মেকআপ, কুন্দন গহনা এবং চিরচেনা মাধুর্য নিয়ে তিনি ছিলেন নজরকাড়া।
এই মুহূর্তটি শুধু ভারতীয়দের জন্য গর্বের বিষয় ছিল না, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কাছেও এটি ছিল এক অভাবিত আবিষ্কার। কান উৎসবে এতটা সাবলীল ও মার্জিতভাবে ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাকের উপস্থিতি এর আগে দেখা যায়নি। দুই দশক পরেও সেই ২০০২ সালের ঐতিহাসিক রথযাত্রার স্মৃতি এখনো আলোচনায় আসে, যেমনটা ঘটেছে সম্প্রতি, কান-এর ‘ভারত প্যাভিলিয়নে’ করণ জোহরের সেশনে।
করণ জানান, তার বাবা যশ জোহরের সঙ্গে ‘কভি খুশি কভি গম’ ছবির বাজারজাতকরণে অংশ নিতে এসেছিলেন। সেসময় ছবিটি ৫,০০০ ডলারে বিক্রি হয়। কিন্তু তার স্মৃতিতে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিল ‘দেবদাস’-এর প্রিমিয়ার এবং ঐশ্বরিয়ার উপস্থিতি।
তিনি বলেন, “ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন হলেন কান-এর রানী। প্রতি বছরই তিনি উৎসবে আসেন এবং প্রতিবারই বিশাল উৎসাহ ও মিডিয়া মনোযোগ তৈরি করেন। এবারও তার উপস্থিতি একইভাবে দাগ কেটেছে।” ‘দেবদাস’-এর কান প্রিমিয়ার ছিল শুধু সিনেমা নয়, ঐশ্বরিয়ার কান-অভিযাত্রার সূচনা, যা পরবর্তীতে তাকে এই উৎসবের সবচেয়ে পরিচিত মুখগুলোর একটি করে তোলে। এরপর প্রায় প্রতি বছরই তিনি ল’ওরিয়াল-এর শুভেচ্ছাদূত এবং ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রতিনিধি হিসেবে কান উৎসবে অংশ নেন। বল গাউন থেকে শুরু করে চমকপ্রদ কৌচার ও শৈল্পিক ভারতীয় পোশাকে ঐশ্বরিয়ার কান লুক বরাবরই শিরোনাম দখল করেছে। এলি সাব, মাইকেল সিনকোসহ বহু নামী ডিজাইনার তাকে সাজানোর জন্য প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।
২০২৫ সালেও তার উপস্থিতি ছিল চোখধাঁধানো। এইবার তিনি পরেছিলেন মানীষ মালহোত্রার ডিজাইন করা ক্লাসিক আইভরি শাড়ি, যার দীর্ঘ পল্লুতে লেইস ট্রেইন ছিল। সাথে ছিল রুবির লেয়ারড নেকলেস, যা সম্পূর্ণ লুককে পূর্ণতা দেয়। তিনি হাজির হয়েছিলেন পরিচালক অলিভার হারমানাস-এর ঐতিহাসিক নাট্যচিত্র ‘দ্য হিস্টরি অব সাউন্ড’-এর প্রিমিয়ারে, যেখানে অভিনয় করেছেন পল মেস্কাল ও জশ ও’কনর।
শহীদ