
সংস্কৃতি ডেস্ক ॥ নতুন করে চলচ্চিত্র পরিচালনা ও প্রযোজনার যাত্রা শুরু করছেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মনোয়ার হোসেন ডিপজল। আগামী ১২ নবেম্বর কক্সবাজারে এক সঙ্গে নতুন তিন চলচ্চিত্রের শূটিংয়ের মাধ্যমে নবদ্যোমে তিনি চলচ্চিত্রের নবযাত্রা শুরু করতে যাচ্ছেন। নানাবিধ প্রতিকূলতা দূরে ঠেলে আবার চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেছেন। এবার প্রযোজনার পাশাপাশি তিনি নিজেই তার নতুন চলচ্চিত্রগুলো পরিচালনা করবেন। এর আগে তিনি তিনটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। তারপর দীর্ঘদিন পরিচালনায় যুক্ত হননি। দেশসেরা পরিচালকদের নিয়ে নির্মাণ করেছেন। ডিপজল জানান, চলচ্চিত্র তিনটির শূটিং শুরু করে বড় আয়োজনের মাধ্যমে এগুলোর বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরবেন। কক্সবাজারে কয়েকটি গান, এ্যাকশন দৃশ্য ও কিছু দৃশ্যের শূটিং শেষে এ মাসের শেষের দিকে ঢাকায় ফিরে চলচ্চিত্র এবং শিল্পী কলাকুশলীদের আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেবেন। ডিপজল বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে এতদিন নির্মাণ থেকে দূরে ছিলাম। এখন সবকিছু গুছিয়ে নতুন করে কাজে নেমেছি। আশা করছি, দর্শক আমার কাছ থেকে যে প্রত্যাশা করেন তা তাদের উপহার দিতে পারব। তিনি বলেন, ভাল গল্প এবং নির্মাণ সঙ্কটের কারণে আমাদের চলচ্চিত্রের দুরবস্থা চলছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দর্শকের মনের মতো গল্পের চলচ্চিত্র নির্মাণের বিকল্প নেই। আমি বরাবরই দর্শকের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছি। এখনও যখন দেখি টেলিভিশনে আমার অভিনীত চলচ্চিত্রগুলো প্রচার হয় তখন ব্যাপক দর্শক তা দেখেন। এর মূল কারণ গল্প। গল্পনির্ভর সিনেমা নির্মাণ করলে যে দর্শক দেখেন তা আমার অভিনীত সিনেমাগুলোই তার প্রমাণ। আধুনিক যুগেও যে দর্শক আমাদের সমাজ, পরিবার ও দেশের গল্প দেখতে চায় তা বোঝা যায়। আমি দর্শকের এই মনোভাবটিকে ধরে রেখেই নতুন সিনেমা নির্মাণ করছি। তিনি বলেন, অশ্লীলতার কারণে যে সময়ে দর্শক পরিবার নিয়ে চলচ্চিত্র দেখতে পারতেন না, সে সময়ে আমি নির্মাণ করেছিলাম ‘কোটি টাকার কাবিন’। এটি পুরো চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপটই বদলে দেয়। গল্পনির্ভর সুস্থধারার চলচ্চিত্র হলে যে দর্শক দেখেন তা এ সিনেমার মাধ্যমে প্রমাণ করেছিলাম। এ ধারাবাহিকতায় একে একে নির্মাণ করেছিলাম ‘চাচ্চু’, ‘মায়ের হাতে বেহেশতের চাবি’সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র। এগুলো দর্শক গ্রহণ করে এবং নির্মাতারাও সুস্থধারা চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী হন। এ ধারাটি ধরে রাখতে এবং সময়ের সঙ্গে তাল মিলাতে না পারায় চলচ্চিত্র আবারও মন্দাবস্থার মধ্যে পড়ে। এখন তা একেবারে প্রায় তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
এ অবস্থা থেকেই আবারও আমি নির্মাণ শুরু করছি। সময়োপযোগী সিনেমা নির্মাণে হাত দিয়েছি। ডিপজল বলেন, একটি চলচ্চিত্র একটি বিনোদন ইন্ডাক্রি। এতে যদি বিনোদনের ঘাটতি থাকে এবং দর্শকের মনের মতো না হয় তাহলে দর্শক তা দেখবেন কেন? এ বিষয়টি মাথায় রেখে আমি চলচ্চিত্রগুলো নির্মাণ করতে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আগামী ১২ নবেম্বর থেকে কক্সবাজারে শূটিং শুরু হবে। সেখানে একটানা ১৫ দিন কাজ করব। নতুন করে চলচ্চিত্র নির্মাণের এ ধারাটি অব্যাহত থাকবে। ডিপজল বলেন, চলচ্চিত্রের দুরবস্থা কাটাতে ভাল ছবি নির্মাণের বিকল্প নেই। আমরা যদি চুপ করে বসে থাকি তাহলে তো এ অবস্থা কাটবে না। কাউকে না কাউকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু নির্মাণ করলেই হবে না, আমি কি নির্মাণ করছি, তার গল্প কেমন, দর্শক গল্প পছন্দ করবে কিনা, এতে কি ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে- এ বিষয়গুলো না ভেবে নির্মাণ করলে তা দর্শকরা দেখবে না। আমি অনেক ভেবেচিন্তে নতুন তিন চলচ্চিত্র নির্মাণ করছি। আমার নতুন চলচ্চিত্রে অনেক গুণীজনদের সম্পৃক্ত করেছি। দেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী আলম খান গান করবেন। পাশাপাশি নতুন শিল্পীদের নিয়েছি। সবমিলিয়ে ভাল নির্মাণে যে ধরনের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগের প্রয়োজন তার সবকিছুই নেয়া হয়েছে। আশা করছি দর্শকদের ভাল কাজ উপহার দিতে পারব। যে কোন মূল্যে আমাদের চলচ্চিত্রকে বাঁচাতে হবে। ধার করে বা আমদানি দিয়ে দেশের চলচ্চিত্র বাঁচানো যাবে না। আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতির মধ্যেই যুগোপযোগী চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। এখন থেকে ধারাবাহিকভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণ করব।