
ছবি: জনকণ্ঠ
শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নের মধ্য চর চিডারচরে গত এক মাস ধরে নদীর ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটছে চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। খুব দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বিলীন হয়ে যাবে কুন্ডেরচরের চিডারচরের বাসিন্দারা।
নদীতীর সংলগ্ন বসতবাড়ি ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। কিছু এলাকায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং অন্তত ৬০টি ঘর অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভাঙনের কয়েক গজ দূরে রয়েছে ১৪ নং বন্দুকমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবছর নদীতীর থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হয়, যা ভাঙনের অন্যতম কারণ। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
বাবুরচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের শতাধিক ঘর এখন পদ্মার কয়েক গজ দূরে। এছাড়া ১৪ নং বন্দুকমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আঃ মান্নান মল্লিকের কান্দি উচ্চ বিদ্যালয়, সুফিজ্ঞান কিন্ডারগার্টেন, কুন্ডেরচর মর্নিংসান কিন্ডারগার্টেন, ভাটকুল বাজার, মসজিদসহ বসতবাড়ি রয়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে। গত কয়েক বছরে আমির মল্লিক কান্দি, গনি মল্লিক কান্দি, আঃ মান্নান মল্লিকের কান্দি, ওফাজউদ্দিন মল্লিকের কান্দি, সোরহাব মল্লিকের কান্দি, আফতু বেপারী কান্দি, ওমেদ আলী মাদবর কান্দি, বাবুরচর সরল খার কান্দি ও আব্বাস বেপারীর কান্দির শতশত বসতবাড়ি নদীভাঙনের কবলে নিঃস্ব হয়েছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র এম. এম. সবুজ মাদবর বলেন, "আমরা চরাঞ্চলের মানুষ চরম অবহেলিত, আমরা চাই টেকসই বেরিবাঁধ যার মাধ্যমে এই অবহেলিত জনগোষ্ঠী স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে জীবনযাপন করতে পারে।"
ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য সাহেদ আলী মল্লিক জানান, "কয়েক বছর যাবৎ পদ্মা নদীর ভাঙনে দিশেহারা পদ্মার পাড়ের বাসিন্দারা, আমরা চাই বেরিবাঁধের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে চিডারচর এলাকায় বসবাস করতে পারে। এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।"
কুন্ডেরচর ইউনিয়নের চিডারচরের বাসিন্দা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আঃ হামিদ মল্লিক বলেন, "পদ্মায় পানি বাড়ছে, সাথে বাড়ছে ভাঙনও। কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।"
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা বলেন, “সরকার একটা ঘর দিয়েছে, কিন্তু যেভাবে নদী ভাঙছে, তাতে বেশিদিন থাকতে পারব না। ঘর চলে যাবে নদীতে। তারপর কীভাবে থাকব, বুঝতে পারছি না।”
কুন্ডেরচর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আক্তার হোসেন বেপারী বলেন, “প্রতি বছরই নদী ভাঙছে। চরাঞ্চলের মানুষের জন্য নদীভাঙন যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। আমরা পাউবোকে জানিয়েছি, আশা করছি দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।”
মুমু ২