
ছবি: সংগৃহীত
ভূমিকম্প, বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনেক সময় ভবন ধসে পড়ে এবং ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়েন বহু মানুষ। সেইসব প্রাণঘাতী মুহূর্তে উদ্ধারকর্মীদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়—আটকে পড়াদের দ্রুত খুঁজে বের করা। এবার এই কাজে যুক্ত হচ্ছে একেবারে অপ্রত্যাশিত এক প্রাণী—ইঁদুর!
বেলজিয়ামের এনজিও APOPO একটি অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে—‘র্যাট রেসকিউ প্রজেক্ট’। এতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে আফ্রিকান জায়ান্ট পাউচড ইঁদুরদের। তাদের ছোট ব্যাকপ্যাকে থাকবে ভিডিও ক্যামেরা, দুই-মুখী মাইক্রোফোন ও লোকেশন ট্র্যাকার। উদ্দেশ্য একটাই—ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের খুঁজে বের করা এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন।
কীভাবে প্রশিক্ষণ পাচ্ছে ইঁদুরগুলো?
এই প্রশিক্ষণ চলছে তানজানিয়ায়। একাধিক র্যাট একটি ঘরে ঢুকে মানবসদৃশ একটি ‘টার্গেট’ খুঁজে বের করছে। টার্গেট খুঁজে পেলেই তারা তাদের গায়ে থাকা ভেস্টের সুইচ টানে, যার মাধ্যমে সিগন্যাল যায় প্রশিক্ষকের কাছে। এরপর বেজে ওঠে একটি বিপ শব্দ, যা ইঁদুরকে জানিয়ে দেয় ফিরে আসতে হবে—ফিরলে দেওয়া হয় পুরস্কার: চিনাবাদাম, কলা বা অ্যাভোকাডো।
ইঁদুরদের এই কাজ তাদের স্বাভাবিক কৌতূহলী স্বভাবেরই অংশ। ধ্বংসস্তূপে ছোট ছিদ্র দিয়ে ঢুকে যাওয়ার ক্ষমতা ও গন্ধ শোঁকার দারুণ ক্ষমতা তাদের এই কাজে পারদর্শী করে তুলেছে।
ইঁদুরদের জন্য বিশেষ ৩ডি-প্রিন্টেড ব্যাকপ্যাক তৈরি করেছেন নেদারল্যান্ডসের ইন্ডহোফেন ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ার স্যান্ডার ভার্ডেইসেন। এই ব্যাকপ্যাকে ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, SD কার্ড ও লাইভ ট্রান্সমিটারের মতো প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে।
প্রশিক্ষণের ধাপ শেষ হওয়ার পরবর্তী ধাপে তুরস্কে GEA রেসকিউ দলের সহযোগিতায় বাস্তবধর্মী পরিস্থিতিতে তাদের কাজ করানো হবে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ভবিষ্যতে ইঁদুররাই হতে পারে মানব উদ্ধারের অবিশ্বাস্য সহকারী।
APOPO আগে থেকেই বিভিন্ন দেশে ল্যান্ডমাইন ও যক্ষ্মা শনাক্তে এই ইঁদুর ব্যবহার করছে। তাদের রেকর্ড বলছে, একটি ইঁদুর এক ঘণ্টায় ২০০ বর্গফুট এলাকা পরীক্ষা করতে পারে, যা একজন মানুষকে করতে লাগে প্রায় ৫০ ঘণ্টা।
মুমু ২