ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

‘মুক্তিযুদ্ধ কর্নার’ আড়াই হাজার বইয়ের সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা

নোমান মিয়া 

প্রকাশিত: ০০:৫৭, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

‘মুক্তিযুদ্ধ কর্নার’ আড়াই হাজার বইয়ের সমৃদ্ধ সংগ্রহশালা

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ছোট একটি কক্ষ

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ছোট একটি কক্ষ। সারিবদ্ধভাবে সাজানো আছে দুটি বই রাখার শেল্ফ। এতে চোখে পড়ে নতুন পুরনো হাজারো বইয়ের ভা-ার। পাশেই রয়েছে ৩টি টেবিল। টেবিলসংলগ্ন ১৫টি চেয়ার সারিবদ্ধভাবে সাজানো। কক্ষের এক পাশে রয়েছে বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। অন্য পাশের দেয়ালজুড়ে স্বাধীনতা সংগ্রাম আর মুক্তিযুদ্ধের প্রতিচ্ছবি। এ যেন বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, স্বধীনতাসংগ্রামের একটি নতুন কাব্যগাঁথা। 
বলছিলাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে চতুর্থ তলায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ কর্নারের কথা। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই কর্নারে সরেজমিন এমনই দৃশ্যপটে বিমোহিত হই। 
জানা যায়, ২০০৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও লেখক-গবেষক মুহম্মদ জাফর ইকবাল দম্পতির উদ্যোগে কর্নারটি স্থাপন করা হয়। প্রাথমিকভাবে কিছু বই নিয়ে কর্নারটির যাত্রা শুরু। বর্তমানে আড়াই হাজার বই নিয়ে সমৃদ্ধ এক ইতিহাসের ভা-ার কর্নারটি। এর মধ্যে অধিকাংশই বঙ্গবন্ধুর জীবন-সংগ্রাম সম্পর্কিত। একইসঙ্গে বিভিন্ন লেখকের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কিত অনেক বইও রয়েছে। 
কর্নার তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, প্রতিদিনই শতাধিক শিক্ষার্থী কর্নারে এসে বই পড়েন। অনেকে বই ধার করে নিয়ে যান। সম্প্রতি দেশের ইতিহাস ও মুক্তযদ্ধের ইতিহাসসম্পর্কিত বিষয় পাঠ্যসূচিতে সংযুক্ত করায় কর্নারে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা আরও বেড়েছে। সমৃদ্ধ এই কর্নারে মাঝে-মধ্যেই লেখক-গবেষকদের যাতায়াত আছে। মূলত নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা দেওয়াই কর্নারের মূল উদ্দেশ্য। 
কর্নার পরিদর্শনকালে কথা হয় পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখিনি। কিন্তু বইয়ে লিখা ইতিহাস থেকে সেই বাস্তব চিত্রকে কল্পনায় দেখতে পারি। যা আমাদের স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত করে। এছাড়া আমাদের কোর্সের সিলেবাসের বিষয়গুলোও অনেকসময় নোট করতে পারি।’
 সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, ‘অবসর পেলেই আমরা এখানে আসি। আড্ডা কিংবা গল্পের চলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে পারি। কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই এমন একটি কর্নার স্থাপনের জন্য।’ এ ছাড়া আরও নতুন নতুন বই সংযোজন করার অনুরোধ জানান এ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু গবেষণা সেলের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল গণি বলেন, যে সকল শিক্ষার্থীরা দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য স্বাধীনতা-সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে আগ্রহী তাদের জন্য ‘মুক্তিযুদ্ধ কর্নার’ একটি মাইলফলক।

×