
ছবি: সংগৃহীত
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইআইটি) মো. আবদুর রাজ্জাককে এফবিসিসিআইয়ের নতুন নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়েছে। বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন যুগ্ম সচিব মুর্শেদা জামান ও যুগ্ম সচিব মুস্তাফিজুর রহমান। আর নির্বাচনী আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম খান। এই বোর্ডের দুই সদস্য হলেন যুগ্ম সচিব তানভীর আহমেদ ও উপসচিব মো. রাজ্জাকুল ইসলাম।
এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনী বোর্ড ও নির্বাচনী আপিল বোর্ডকে স্বাগত জানিয়েছেন, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক জাভেদ ফ্যান কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আফতাব জাভেদ। তিনি বলেন, এফবিসিসিআই দেশের সাড়ে ৪ কোটি ব্যবসায়ীর প্রতিনিধিত্ব করছে। তাই আগামী এফবিসিসিআই নির্বাচন ব্যবসায়ীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল মার্চেন্ডাইস ম্যানুফ্যাকচারার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আফতাব জাভেদ আরও বলেন, নতুন নির্বাচনী ও আপিল বোর্ড একটি সুষ্ঠু ও ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন করতে সমর্থ্য হবেন। আমরা তাদের স্বাগত জানাই। আশা করছি,নির্বাচনের মাধ্যমেই ব্যবসায়ীরা তাদের সঠিক নেতৃত্ব বেচে নিতে পারবেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরিচালনা পর্ষদের পদত্যাগের দাবিতে তৎপর হন সদস্যদের একাংশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সভাপতি পদ থেকে মাহবুবুল আলম পদত্যাগ করেন। পরে ১১ সেপ্টেম্বর ফেডারেশনের পর্ষদ বাতিল করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য মো. হাফিজুর রহমানকে সংগঠনটিতে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত মাসে বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা, ২০২৫–এর প্রজ্ঞাপন জারি করে। সে অনুযায়ী, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদের আকার ছোট ও মনোনীত পরিচালকের সংখ্যা কমানো হয়েছে। সর্বশেষ ফেডারেশনের পর্ষদ ছিল ৮০ জনের। এর মধ্যে মনোনীত পরিচালক ছিলেন ৩৪ জন। এখন থেকে পর্ষদের আকার হবে ৪৬ জনের। এর মধ্যে চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ৫ জন করে ১০ জন মনোনীত পরিচালক থাকবেন। এর বাইরে নারী চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে ১ জন করে দুজন মনোনীত পরিচালক পর্ষদে যুক্ত হবেন।
নতুন বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা কার্যকর হওয়ার পর ফেডারেশনের প্রথম নির্বাচনে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে সভাপতি ও চেম্বার গ্রুপ থেকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নির্বাচিত হবেন। আর পর্ষদের ১২ জন মনোনীত পরিচালককে ফেডারেশনের সাধারণ পরিষদের সদস্য হতে হবে। দুই বছর মেয়াদে গঠিত সাধারণ পরিষদের প্রত্যেক সদস্যকে এককালীন ২০ হাজার টাকা নিবন্ধন ফি দিতে হবে।
টানা দুবারের বেশি নির্বাহী কমিটি বা পর্ষদে থাকা যাবে না। অর্থাৎ টানার দুবার নির্বাচিত হওয়ার পরের বার বিরতি দিয়ে আবার নির্বাচন করা যাবে। এই নিয়ম ভবিষ্যতের পাশাপাশি বিগত সময়ের জন্যও প্রযোজ্য হবে। নতুন বিধিমালায় থাকা বিধানটির কারণে এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠনের অনেক সাবেক ও বর্তমান নেতা পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সে জন্য নতুন বিধানটির কারণে ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ ক্ষুব্ধ হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, কৌশলে কিছু ব্যবসায়ীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতেই একটি গোষ্ঠীর তৎপরতায় এটি যুক্ত করেছে মন্ত্রণালয়। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর এফবিসিসিআই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচনী বোর্ড।