
ছবিঃ সংগৃহীত
কোরবানি ঈদ ঘিরে দেশের অন্যতম মৌসুমী শিল্প—চামড়া খাতে আবারও আলোচনায় এসেছে অর্থ সংকট। ট্যানারি মালিকদের সহায়তায় এবার ২৩২ কোটি টাকার বিশেষ ঋণ ফান্ড গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ অর্থ খুবই অপ্রতুল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভাষ্য, এই ঋণ ফান্ডের মাধ্যমে ট্যানারি মালিকরা চাহিদামতো কাঁচা চামড়া কিনতে পারবেন। তবে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের মতে, কোরবানির মৌসুমে প্রয়োজন প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা, ফলে ২৩২ কোটি টাকার এই উদ্যোগ কার্যত ফোঁটা পানির মতোই।
বাস্তবতা কঠিন: ব্যবসায়ীদের দাবি
ট্যানারি মালিকদের একটি বড় অংশ অতীতে ঋণ নিয়ে ফেরত দেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোও খোলাসা নয়। যেমন, সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখার জিএম শফিকুল ইসলাম বলেন, “এই বিশেষ ঋণ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।”
সালামা ট্যানারি লিমিটেডের এমডি সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, “সরকারের সক্রিয় হস্তক্ষেপ ছাড়া এই খাতের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা গত ১০ বছর ধরে ১ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছি রপ্তানি আয়ে। এটা কষ্টদায়ক।”
সাভারে নির্মিত চামড়া শিল্প নগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) ৯ বছরেও পুরোপুরি চালু হয়নি। ফলে পরিবেশগত দিক থেকেও এই খাত পড়ে আছে অনিয়মের জালে। শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “ট্যানারি মালিকদের নিজেদের উদ্যোগেই ইটিপি প্রস্তুত করতে হবে।”
রেমিট্যান্স এলো, তবু শিল্পে ঘাটতি
ঈদ সামনে রেখে মাত্র তিন দিনে ৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স প্রবাহ ঘটলেও চামড়া খাতের অর্থায়নে তার কোনো ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।
সরকারি ঋণ সহায়তা থাকলেও চামড়া শিল্পের দীর্ঘমেয়াদি সংকটের সমাধান এখনো দূর অস্ত। উদ্যোক্তারা বলছেন, পরিকল্পিত নীতিমালা, পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়া কোরবানির চামড়া থেকেই দেশে আর স্বর্ণ ছোঁয়া যাবে না।
পৃথী