
ছবি: জনকণ্ঠ
প্রথমে দাদা, তারপরে বাবা, নিজে এবং তার ছেলে ও ছেলের ছেলে জোকের তেল বিক্রি করছেন হাটে-বাজারে বহু বছর ধরে। এ তেল মানুষের শারীরিক ব্যথাসহ বিভিন্ন অংশে কাজ করে থাকে। এ কারণে জোকের পিছনে সময় দিয়ে থাকেন তাদের পরিবার। এমনকি জোকের তেল বিক্রি করায় নাম হয়েছে জোক বাবু।
সরেজমিনে জানা যায় কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর রেলপাড়ায় জোক বাবু। তিনি তার বাপ দাদার স্মৃতি ও ব্যবসা ধরে রাখার জন্য ১৯৮০ সাল থেকে শহর ও গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় থেকে বর্ষা মৌসুমে খাল-বিল থেকে ছোট থেকে বড় জোক সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। এরপর জোক বাবু জোকগুলো বড় করার জন্য একপাত্রে ঢেলে কাঁদা মাটি, গরু ও ছাগলের জমাটকৃত রক্ত খেতে দিয়ে বাঁচিয়ে রাখেন দিনের পর দিন। হাঁটু ও বিভিন্ন ব্যথাসহ মালিশের জন্য বাড়িতেই স্ত্রীর সহায়তায় একটি নারিকেলের ভিতর কয়েকটি জোক দিয়ে তেল তৈরি করেন। পরে এ তেল হাট-বাজারে বোতল প্রতি ৫০ থেকে ২০০ টাকার মত তেল বিক্রি করে সংসার ও জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
এ বিষয়ে জোক বাবু বলেন বাপ দাদার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি বহু বছর ধরে জোঁকের তেল বিক্রি করেন হাট-বাজারে। এই জোঁক সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন চিকিৎসার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাইতো জোক মানুষের কল্যাণের কথা ভেবে তিনিও বর্ষা মৌসুমে খাল বিলসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে জোঁক সংগ্রহ করে থাকেন। এরপর তিনি বাড়িতে এই তেল বানান। এ তেল ঘাঁ পচড়া বা ব্যথার জন্য বিশেষ উপকারিতা আছে বলে জোক বাবু জানান। আগের তুলনায় এখন এ তেল বিক্রি কম হয়। তবে অনেকেই তার কাছ থেকে শুধু জোঁক কিনে নিয়ে তেলসহ বিভিন্ন ওষুধ করছেন বলে তিনি বলেন।
জোক বাবু স্ত্রী সাহারা বলেন তার স্বামী বর্ষা মৌসুমে জোঁক সংগ্রহ করে। সেই জোঁকগুলোকে দেখা শোনা এরপর বাড়িতে ঔষুধের জন্য তেল করে থাকেন। এরপর সে তেলগুলো হাটে- বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যান তার স্বামীসহ ছেলেরা।
প্রতিবেশীরা বলছেন জোক বাবু ছোটকাল থেকে জোঁক সংগ্রহ করার পর হাটে বাজারে এ তেল বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। তেল কেনার জন্য অনেক রোগীরা বাড়িতে থেকে কিনে নিয়ে যান।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ দেবেশ চন্দ্র সাহা এম ও আয়ুর্বেদী বলেন ব্যথা যুক্ত স্থানে মালিশের জন্য কার্যকর হয়ে থাকে এসব তেল। মালিশের কারণ ক্ষণিকের জন্য ব্যথা কমে গেলেও পরবর্তীতে আরও বেশি ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তিনি আরও বলেন যেকোনো রোগের চিকিৎসার জন্য ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ দেন।
সাব্বির