ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১০ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঝিনাইগাতীর ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে

হারুন অর রশিদ দুদু, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, ঝিনাইগাতী, শেরপুর

প্রকাশিত: ২১:৫৪, ৯ জুন ২০২৫

ঝিনাইগাতীর ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে

শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। কুমার পরিবারগুলোতে চলছে দুর্দিন। মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত শত শত কুমার পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহার-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। এক সময় এ উপজেলায় মৃৎশিল্পের ব্যাপক চাহিদা ছিল। তখন ঘরে ঘরে ছিল কুমারদের তৈরি মাটির পাতিল, কলসি, বদনা, সানকি ও কাদা-সহ নানা ধরনের মাটির জিনিসপত্র। কুমাররা সেগুলো এ উপজেলার বাইরেও রপ্তানি করত। সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে কাটতো তাদের দিন। সময়ের ব্যবধানে মৃৎশিল্পের চাহিদা কমে যাওয়ায় কুমারদের ভাগ্যে নেমে আসে বিপর্যয়। অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের জিনিসপত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় হেরে যায় মৃৎশিল্প। সারাদেশের মতো ঝিনাইগাতীর মৃৎশিল্পও আজ মৃত প্রায়। তুলনামূলকভাবে অ্যালুমিনিয়াম এবং প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসের দাম যাই হোক না কেন, টেকসই ও ব্যবহারের দিক দিয়ে এগুলো সহজ। গ্রাম বাংলার মানুষ কুমারদের তৈরি জিনিসপত্র বাদ দিয়ে তাই এখন এসবের দিকেই ঝুঁকে পড়েছে। নিম্নবিত্ত, বিত্তহীন ও গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বৃহৎ অংশের কাছে যে মাটির বাসন অতি প্রিয় ছিল তারাও এখন এগুলো বর্জন করে প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের জিনিসপত্র ব্যবহারে উৎসাহী হয়ে উঠেছে। এঁটেল মাটি, রং, জ্বালানিসহ যাবতীয় উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের নির্মাণ খরচও উঠছেনা। ফলে তারা বাধ্য হয়ে বাপ-দাদার আমলের ধারাবাহিক পেশা পরিবর্তন করছে। তাই এলাকার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতীর চাপাঝোড়া গ্রামের সুজন পাল জানান, “কুমার শিল্পের উপর ব্যাংক ঋণ পেলে অনেক মাটির তৈরি খেলনা জাতীয় সরঞ্জামাদি তৈরি করে তা বাজারজাতসহ নিজেদের কোন রকম খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার অবলম্বনটুকু হতো।” এ বিষয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে জমির কাগজপত্র ছাড়া ঋণ দিতে তারা অস্বীকৃতি জানান।

Jahan

×