
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একতরফা সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যের অনুমতি ছাড়া লস অ্যাঞ্জেলেসে ফেডারেল সেনা মোতায়েন করায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন তিনি।
এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক কঠোর বিবৃতিতে গভর্নর নিউসম বলেন, "এটাই ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা ছিল। তিনিই পরিস্থিতি জ্বালিয়ে দিয়েছেন এবং বেআইনিভাবে ন্যাশনাল গার্ডকে ফেডারেল সেনায় রূপান্তর করেছেন। আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করছি।"
তিনি আরও জানান, এভাবে রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই সেনা নামানো হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানকে অবজ্ঞা করার শামিল। এতে করে বেসামরিক নাগরিক এবং জরুরি সেবাদানকারী কর্মীরা ঝুঁকিতে পড়েছেন বলেও সতর্ক করেন নিউসম।
লস অ্যাঞ্জেলেস ও সান ফ্রান্সিসকোতে ফেডারেল সেনার এই আকস্মিক উপস্থিতি আরও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। তিনদিন ধরে চলা বিক্ষোভ হঠাৎ করেই সহিংস রূপ নেয়। এলএ-তে ২৭ জন ও সান ফ্রান্সিসকোতে প্রায় ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া মলোটভ ককটেল ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যানবাহন ও ভবন, এমনকি বেশ কিছু সেলফ-ড্রাইভিং 'ওয়েমো' গাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসনের নেতারা জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন ব্যাস বলেন, "এলএবাসীরা সহিংসতায় নয়, শান্তির পথে বিশ্বাসী। সহিংসতা করে প্রশাসনের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করতে দেবেন না।"
অন্যদিকে, হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট গভর্নর নিউসমকে দায়ী করে বলেছেন, "গ্যাভিন নিউসম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি এতটাই দুর্বল ছিলেন যে শহর রক্ষা করতে পারেননি।"
এই সময়েই ডোনাল্ড ট্রাম্প সই করেছেন একটি নির্বাহী আদেশ, যেখানে ১২টি দেশের নাগরিকদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এবং একটি বিতর্কিত নীতি চালু করা হয়েছে—যেখানে অবৈধ অভিবাসীদের স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করলে তাদের ১,০০০ ডলার এবং যাতায়াত ভাতা দেওয়া হবে।
মোটকথা, মার্কিন রাজনীতিতে ‘ফেডারেল বনাম স্টেট’ কর্তৃত্বের সংঘাত নতুন মোড় নিয়েছে এবং এর প্রভাব পড়ছে রাজপথ থেকে কোর্টরুম পর্যন্ত।
মিমিয়া