ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১০ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ব্রেন টিউমার সারা যায়? নিউরোসার্জনরা জানালেন সম্ভাবনা ও সময়সীমা

প্রকাশিত: ০০:৩৭, ১০ জুন ২০২৫

ব্রেন টিউমার সারা যায়? নিউরোসার্জনরা জানালেন সম্ভাবনা ও সময়সীমা

ব্রেন টিউমার নিয়ে বহু মানুষের মধ্যে রয়েছে ভয় ও অনিশ্চয়তা। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, সময়মতো শনাক্তকরণ ও উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে ব্রেন টিউমার নিরাময় সম্ভব, এবং অধিকাংশ রোগী ধাপে ধাপে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।

নিউরোসার্জনদের মতে, টিউমারের ধরণ, অবস্থান এবং অপারেশনের ধরন অনুসারে রোগীর সেরে ওঠার সময়সীমা ও জটিলতা ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত কম জটিলতা বিশিষ্ট টিউমারের ক্ষেত্রে অপারেশনের পর মাত্র কয়েক সপ্তাহেই রোগী কর্মক্ষম হয়ে উঠতে পারেন। তবে জটিল ক্ষেত্রে পূর্ণ সুস্থতা অর্জনে কয়েক মাস বা এক বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন:

  • ব্রেন টিউমার অপারেশনের পর হাসপাতাল থেকে ছুটির সময় সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে নির্ধারিত হয়।

  • হালকা কাজ বা দৈনন্দিন কাজে ফিরতে লাগে ৪ থেকে ৮ সপ্তাহ।

  • পূর্ণ কর্মক্ষমতা ও মানসিক স্বচ্ছতায় পৌঁছাতে সময় লাগতে পারে ৩ থেকে ৬ মাস বা তার বেশি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রোগীর মানসিক অবস্থা, সঠিক থেরাপি এবং পরিবার ও সামাজিক সহায়তাও দ্রুত সুস্থতার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পুনর্বাসনের জন্য ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি এবং কগনিটিভ রিহ্যাবের প্রয়োজন হয় অনেক ক্ষেত্রে।

চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী:
১. নিয়মিত চেকআপ ও এমআরআই করানো অত্যাবশ্যক।
২. অপারেশনের পরে হঠাৎ মাথাব্যথা, দুর্বলতা বা খিঁচুনির মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।
৩. রোগীর খাদ্যাভ্যাস, বিশ্রাম এবং ওষুধ সেবনের ব্যাপারে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে।

সম্প্রতি এক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে ব্রেন টিউমার অপারেশন থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মারিয়া মেনুনোস। তিনি জানান, অপারেশনের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি কথা বলা শুরু করেন এবং তিন মাসের মধ্যে অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সক্ষম হন।

এই উদাহরণ চিকিৎসকদের মতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ—যেখানে চিকিৎসা, থেরাপি এবং সময়মত মনোযোগের মাধ্যমে রোগী নতুন করে জীবন ফিরে পেতে পারেন।
ব্রেন টিউমার আর আগের মতো “মরণব্যাধি” নয়। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নয়ন, প্রযুক্তি ও সচেতনতার সমন্বয়ে এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য ও অনেক ক্ষেত্রে নিরাময়যোগ্য রোগে পরিণত হয়েছে। তাই, আতঙ্ক নয়—সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণই হতে পারে নতুন জীবনের সূচনা।

Jahan

×