
গ্রীষ্মকাল আমাদের উপমহাদেশে এক বিশেষ ঋতু, যা তাপদাহ, ঘাম, পানিশূন্যতা এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সম্ভাবনা বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে। এ সময়ে শরীর ও ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি, বিশেষ করে দীর্ঘসময় বাইরের পরিবেশে কাজ বা চলাচলের প্রয়োজন হলে। নিচে গ্রীষ্মকালে শরীর সুস্থ ও সতেজ রাখার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো:
১. হাইড্রেশন বা পর্যাপ্ত পানি পান
গ্রীষ্মে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে পানি ও লবণাক্ত উপাদান বেরিয়ে যায়। তাই দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। সঙ্গে যোগ করা যায় ডাবের পানি, ফলের রস (চিনি ছাড়া), লেবু পানি কিংবা ওরাল রিহাইড্রেশন সল্যুশন (ORS)।
২. সঠিক খাদ্যাভ্যাস
হালকা, সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং হজম প্রক্রিয়াকে সচল রাখে। টাটকা ফলমূল (যেমন তরমুজ, খিরসা, বাঙ্গি), সবুজ শাকসবজি এবং দই গ্রীষ্মে খুব উপকারী। অতিরিক্ত তেল-মসলা ও ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
৩. সৌররশ্মি থেকে সুরক্ষা
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি (UV rays) ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। রোদে বের হওয়ার আগে সানস্ক্রিন (SPF ৩০ বা তার বেশি) ব্যবহার করা জরুরি। এছাড়া হ্যাট, ছাতা, সানগ্লাস এবং হালকা রঙের সুতি পোশাক ব্যবহার করা উচিত।
৪. ত্বকের যত্ন
গরমে অতিরিক্ত ঘামের কারণে ত্বকে ব্রণ, র্যাশ বা ফাঙ্গাল ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। নিয়মিত মুখ ধোয়া, ত্বকের ধরণ অনুযায়ী ফেসওয়াশ ব্যবহার, এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এ সমস্যাগুলোর ঝুঁকি কমায়।
৫. পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুম
গ্রীষ্মের অতিরিক্ত গরমে শরীর সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করা এবং দুপুরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া শরীরকে পুনরুজ্জীবিত করে।
৬. ব্যায়াম ও শারীরিক সচেতনতা
গরমের সময় ভারী ব্যায়ামের পরিবর্তে হালকা যোগব্যায়াম বা হাঁটা শ্রেয়। ব্যায়ামের সময় শরীর থেকে ঘাম ঝরে বলে পরে অবশ্যই পানি ও ইলেক্ট্রোলাইট পূরণ করতে হবে।
গ্রীষ্মকাল স্বাস্থ্যের জন্য এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। তবে সঠিক জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস ও সচেতনতা আমাদের সুস্থ রাখে এবং গ্রীষ্মের অস্বস্তিকে অনেকাংশে দূর করতে সহায়তা করে। শরীরের প্রতি যত্নবান থাকাই হলো প্রকৃত সুস্থতার চাবিকাঠি।
Jahan