ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন হোক

প্রকাশিত: ০৯:০৪, ৩০ মে ২০১৯

 বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন হোক

সালাহ্ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী লিপু ॥ রমজান মাসের শেষ বিকেল থেকে শাওয়ালের এক ফালি চাঁদের খোঁজে সকল মুসলমানের চোখ নিবিষ্ট থাকবে পশ্চিমাংশে। আর সে চাঁদ দেখা গেলে শুরু হবে উৎসবের উন্মাদনা। আমাদের ব্যস্ততম জীবনকে রাঙিয়ে তুলতে দুঃখ, কষ্ট এবং সব ব্যথা ভুলিয়ে দিতে আবারও আমাদের মাঝে ফিরে আসছে ঈদ। জীবিকার তাগিদে মানুষ গ্রাম ছেড়ে নগরে জীবনযাপন করে। তবুও নাড়ির টানে, প্রাণের টানে, আর ভালবাসার টানে এখনও আমরা ছুটে চলি সুদূর গ্রামে। গ্রামেই যে সবার শেকড়। আবহমান কাল ধরে বাঙালীর ঈদ মানে গ্রামে প্রিয়জনের কাছে অবিরাম ছুটে চলা। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাাগি করে নিতে আমরা ছুটি চলি শেকড়ের টানে। মমতার আঁচল বিছিয়ে প্রতীক্ষা করেন পিতামাতা, সহধর্মিণী বা প্রিয় সন্তানটি কখন ঘরে ফিরে আসবে। অপেক্ষার প্রহর প্রায় শেষ। এখন বাড়ি যাওয়ার পালা। মানুষ এখন নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে চায়, কিন্তু সে সুযোগ তো নেই। বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেনের আগাম টিকেট বিক্রি শুরু করেছে। তারমধ্যে অর্ধেক টিকেট দেয়া হচ্ছে অনলাইন এ্যাপসের মাধ্যমে, দেয়ার কথা বললেও সে এ্যাপসের সংযোগ না পাওয়ায় যাত্রীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। ট্রেনের টিকেট যাত্রীদের দেয়ার পূর্বেই নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে কালোবাজারিদের করাল গ্রাসে। ট্রেনের টিকেট এখন সোনার হরিণ। রেলমন্ত্রীর কথায় যাত্রীরা আশায় বুক বাঁধলেও তা এখন আশায় গুড়েবালি। ট্রেন, লঞ্চ, বাসের টিকেটের জন্য চলছে হাহাকার। ঈদ উপলক্ষে অনেক লোককে ট্রেন ও লঞ্চের ছাদে চড়ে বাড়ি যেতে দেখা যায়। অসাধু মালিক আর কর্মকর্তাদের অতি মুনাফার লোভে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করেছে দূরপাল্লার বাস, ট্রেন, লঞ্চের টিকেটের। টিকেট সঙ্কট, যানজট, অপর্যাপ্ত পরিবহনের কারণে প্রতিবছর ঘরমুখো মানুষের চরম দুর্ভোগ হয়। সরকার যদি আরও কঠোরভাবে তদারকি করে, তবে সকল পরিবহনের টিকেটের প্রাপ্যতা সহজলভ্য হতো এবং সরকারও সকলের কাছে প্রশংসিত হতো। এক্ষেত্রে সরকারের নজরদারি বৃদ্ধি করা খুবই প্রয়োজন। তবে আশার কথা সরকার ইতোমধ্যে মেঘনা, গোমতি সেতুসহ সড়ক ও মহাসড়কে উন্নয়ন করেছেন। বাস চালকদের নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ি চালানোর কারণে ও সচেতনতার অভাবে অনেকে বিভিন্নভাবে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। লঞ্চে অধিক যাত্রীর কারণে সলিল সমাধি হয় অনেক লোকের। উৎসব শেষে মানুষের আবার কর্মস্থলে আসার পথে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। যেসব মানুষ ঈদ পালন করতে ঘরে যাবে, তারা সকলে নিরাপদে কর্মস্থলে ফিরে আসতে পারলে, তবেই ছুটিতে মানুষের ঘরে যাওয়ার আনন্দ পূর্ণতা পাবে। ঘরমুখো এসব মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ও সুস্থভাবে ঘরে ফিরে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবে সে প্রত্যাশা রাখি। ঘরমুখো মানুষের যাত্রা শুভ হোক। সকলের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাক ঈদের সওগাত। ঈদের আনন্দ রশ্মিতে বিস্তৃত হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য। সম্প্রীতির আনন্দ ধারায় সিক্ত হয়ে উন্নত জীবন লাভ করুক। মিলনের বার্তা নিয়ে আঁকা বাঁকা চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় উদ্ভাসিত হোক সকলের হৃদয়। চট্টগ্রাম থেকে
×