ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার টিকা নিতে ডায়াবেটিসের রোগীর জ্ঞাতব্য

প্রকাশিত: ০০:১২, ১৩ এপ্রিল ২০২১

করোনার টিকা নিতে ডায়াবেটিসের রোগীর জ্ঞাতব্য

২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরে হওয়া করোনাভাইরাস দ্বারা সংঘটিত রোগ (কোভিড ১৯) পৃথিবীর সবক’টি দেশের মানুষকে ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে; কোটি কোটি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছেন। মৃত্যুর এ তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে দিনের পর দিন। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীগণ উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি অকার্যকর, হাঁপানি, দৈহিক স্থূলতার রোগীদের সঙ্গে এ রোগে আক্রান্ত হলে মৃত্যুর তীব্র ঝুঁকিতে রয়েছেন। অন্য আরও কিছু রোগের মতো ডায়াবেটিসের রোগীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, রোগ হলে তার সঙ্গে লডাই করার সক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে, একই সঙ্গে বসবাস করা অন্যান্য মানুষের তুলনায় ডায়াবেটিস থাকলে আপনি চট করেই এ ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন। যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি তারা করোনাভাইরেসের সহজ শিকার। ভাবতে চেষ্টা করা হচ্ছিল শিশু-কিশোররা মনে হয় করোনায় খুব একটা আক্রান্ত হবে না; কিন্তু তাও আর বলা যাচ্ছে না। ইদানীং সকল বয়সের মানুষকেই করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন আক্রান্ত হতে এবং দ্রুত খারাপ হয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। গবেষণায় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে শীঘ্রই। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিজেকে রক্ষা করতে হলে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষার আচরণগুলোর সঙ্গে একটি নির্ভরতার আশ্বাস দিচ্ছে টিকা নেয়া। বিভিন্ন দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শক্রমে বিভিন্ন লাগসই নীতিমালায় তাদের জনগণের টিকা প্রদান শুরু“করেছে। ডায়াবেটিসের রোগীদের কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব পরিলক্ষিত হচ্ছে টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে। আর, তাই এ লেখা। করোনার টিকা কি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ? এখন পর্যন্ত এ টিকা নিয়ে তেমন বড় ধরনের ঝুঁকি দেখা দেয়নি; ডায়াবেটিসেও না। বরং ডায়াবেটিসের রোগী করোনায় আক্রান্ত হলে অতিরিক্ত মৃত্যুঝুঁকি বিবেচনা করে তাদের টিকা প্রদানের প্রাধিকার তালিকায় স্থান দিতে পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং সকল অথরিটি এর সঙ্গে একমত। যাদের রক্তের গ্লুকোজ অনেক বেশি (অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস) তাদের দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণে এনে তারপর টিকা নেয়া দরকার। বাংলাদেশে সরকার থেকে এ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ডের তৈরি কোভিশিল্ড টিকা, দুই ডোজের; আট সপ্তাহ অন্তর নিতে হবে। এ ছাড়া জনসন ও জন্সনের, ফাইজার বা মডার্নার তৈরি কনার টিকাও ডায়াবেটিসে নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয়েছে। করোনার টিকা নেয়ার পর সৃষ্ট রোগ প্রতিরোধ প্রক্রিয়া শুরুতে কিছুটা গরমের সঙ্গে সঙ্গে রক্তের গ্লুুকোজ বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা থাকে। তাই, ডায়াবেটিস ১০ রোগীর রক্তের কাক্সিক্ষত মাত্রায় [৬ থেকে ১০ মিলিমোল/লিটার]- এনে টিকা দেয়াটা শ্রেয়। সে সকল ডায়াবেটিসের রোগী এখনও নিতে পারেননি বা নেননি, তারা ৮ এপ্রিল ২০২১ থেকে শুরু হওয়া টিকাদান সময়কালে নিয়ে নিতে ভুল করবেন না। ঘরেই থাকুন, যতটা সম্ভব, মাস্ক পরুন, বাইরে যেতে হলে, ভিড় এডিয়ে চলুন নিজে নিরাপদে থাকুন, পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হোন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন বছর জুড়ে, আজীবন। ডাঃ শাহজাদা সেলিম সহযোগী অধ্যাপক এ্যান্ডক্রাইনলজি বিভাগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়য়, ঢাকা
×