ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দলের জয়টাকেই বড় করে দেখছেন সাকিব

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১১ জুন ২০১৭

দলের জয়টাকেই বড় করে দেখছেন সাকিব

স্পোর্টস রিপোর্টার, লন্ডন থেকে ॥ সাকিব আল হাসান কী জ্বলে উঠবেন? একটি করে ম্যাচ যায়। এ প্রশ্ন উঠতে থাকে। অবশেষে সাকিব জ্বলে উঠলেন। এমন ম্যাচে জ্বললেন যখন তার জ্বলনে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেল নিউজিল্যান্ড। বড় মাপের খেলোয়াড়রা নাাকি বড় ম্যাচের জন্য নিজের নৈপুণ্য জমিয়ে রাখেন। সাকিব যেন তাই। ১২ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ব্যাট হাতে নেমে ১১৫ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় ১১৪ রানের ইনিংস খেলেন সাকিব। তার এ দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ম্যাচও জিতে বাংলাদেশ। তাতে করে ম্যাচ সেরাও হন। কিন্তু নিজের নৈপুণ্য নিয়ে নন, সাকিব দলকে যে জেতাতে পেরেছেন তাতে বেশি খুশি। সাকিব বলেছেন, ‘দলকে জেতানোটাই আসল।’ সাকিব জানান, ‘দলের কন্ট্রিবিউট করতে পারা অবশ্যই ভাল। আমার ব্যক্তিগত দিক থেকেও এটা ভাল অর্জন। আইসিসির কোন টুর্নামেন্টে এক শ’ করা। আমাদের পুরো দলের জন্য একটা ভাল এচিভমেন্ট। এই জয়টা আমাদের অনেক বেশি কনফিডেন্স দেবে। ভবিষ্যতে যে কোন সিচুয়েশন থেকে যে ম্যাচ জেতা সম্ভব সেটা আমরা বিশ্বাস করতে পারব। এটা একটা বড় উদাহরণ।’ সেমিফাইনাল নিয়ে বলতে গিয়ে জানান, ‘আসলে তো আমাদের হাতে কিছু নেই। এখানে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড ম্যাচের ওপর সব ডিপেন্ড করছে। সবাই অবশ্য ইংল্যান্ডকে সাপোর্ট করবে। কিন্তু সাপোর্ট করে তো লাভ নেই। তো দেখা যাক যদি অস্ট্রেলিয়াহেরে যায় আমাদের জন্য অনেক ভাল হবে। অনেক বড় এ্যাচিভমেন্ট হবে। তারপরও আমার কাছে মনে হয় আমরা যদি নাও কোয়ালিফাই করতে পারি, তারপরও বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য অনেক বড় একটা এ্যাচিভমেন্ট।’ যখন নামেন ক্রুশিয়াল মোমেন্ট ছিল। সে সময়ের ভাবনা কী ছিল? সাকিব জানান, ‘কিছুই না। জাস্ট ব্যাটিং করতে থাকা যতক্ষণ সম্ভব। কারণ অনেক ওভার ছিল। ইদানীং তো এ রকম বেশি ওভার ব্যাটিংও করতে পারি না। তাই ইচ্ছে ছিল যে যত বেশি সময় সম্ভব ব্যাটিং করা। রিয়াদ ভাই এসে খুবই ভাল ব্যাটিং করছিল। এসেই তিনি আমার ওপর থেকে প্রেসারটা সরিয়ে নেন। যখন আমাদের ১০০/১১০ রানের জুটি হয়ে গেল তখন দেখলাম যে ২০/২২ ওভারের মতো আছে। ১৩০/১৪০ রানের মতো দরকার। যেহেতু আমরা এখন অনেক টি২০ ম্যাচ খেলি। আমরা জানি যে ৭ রান করে খুব বেশি প্রবলেম হবে না। যদি আমরা ২০ ওভার ব্যাটিং করতে পারি। গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমরা ২ জন ৪০/৪৫ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করি। সেটা আমরা করতে পেরেছি।’ রিয়াদের সাথে ব্যাটিং কি সবসময় এভাবে উপভোগ হয়? সাকিব বলেন, ‘আসলে আমরা যেহেতু একসাথে অনেকদিন খেলছি, যখন তামিমের সঙ্গে ব্যাটিং করি আমাদের অনেকগুলো ভাল জুটি আছে। মুশফিক ভাইয়ের সাথে অনেক আছে। রিয়াদ ভাইয়ের সাথেও অনেকগুলো আছে। কারণ আমরা ব্যাটিংও করি পাশাপাশি যেহেতু, তাই ব্যাটিং করার সুযোগটাও বেশি হয় এইসব খেলোয়াড়ের সঙ্গে। যেহেতু অনেকদিন থেকে একসাথে খেলছি। তাই বোঝাপড়াটা ভাল থাকে। কে কি করতে চাচ্ছি আমরা একে অপরেরটা বুঝি। এটা অবশ্যই হেলপফুল দলের জন্য।’ আপনি সাধারণত শেষ করে আসতে পারেন না। এবার কি ডিটারমাইন্ড ছিলেন শেষ করে আসবেন? সাকিব বলেন, ‘সেঞ্চুরিটা পার্সোনাল এচিভমেন্ট ছিল। দলকে জেতানোটা ছিল বড় সবসময়। তামিম সবসময় বলে জীবনে শেষ করে আসতে পারলি না। এবার ইচ্ছে ছিল শেষ করব। এবারও হয়নি। হয়তো অন্য কোন ম্যাচের জন্য থাকল। দেখা যাক। ক্রিকেটের কথা আসলে বলা যায় না। শেষ করতে পারলে অবশ্যই ভাল লাগত। ওই সময় আসলে ওই বলটা মারার ইচ্ছে ছিল না। চিন্তা করছিলাম যে আমি যদি মারি তাহলে রিয়াদ ভাইয়ের এক শ’টা হবে না। প্রথমে চিন্তা ছিল এক নেব। বল দেখছি মেরে দিয়েছি। যদি মারার মুডে থাকতাম তা’হলে লাগার চান্স বেশি ছিল। ঠিক আছে। যা পেলাম তাই ভাল।’ তারপরও কি মনে হয় শেষ কর আসতে না পারার কারণে আফসোস লাগে? সাকিব বলে দিলেন, ‘না আফসোস লাইফে নাই।’
×