ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা

শেয়ারবাজারের সংকট গভীর হচ্ছে আস্থার অভাবে

​​​​​​​অপূর্ব কুমার

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

শেয়ারবাজারের সংকট গভীর হচ্ছে আস্থার অভাবে

.

দেশের শেয়ারবাজারে মন্দাবস্থা আরও দীর্ঘ হচ্ছে। প্রতিনিয়ত বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমছে। তাদের  লোকসান বাড়তে বাড়তে নিঃস্ব হওয়ার উপক্রম হয়েছে। পতন ঠেকাতে নানা উদ্যোগও কোনো কাজে আসছে না। তারল্য সংকট এবং নতুন বিনিয়োগের অভাবে বাজারে থাকা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অজানা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দরপতন রোধে নতুন সার্কিট এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার আপ্রাণ চেষ্টাও নতুন বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে পারছে না। উল্টো শেয়ার বিক্রি করে পুঁজি রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছেন শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা। নতুনদের আকৃষ্ট করতে না পারা এবং বাজারে সক্রিয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার অভাবে সংকট আরও গভীর হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারে অংশীজনের অংশগ্রহণ কমছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময়ে শেয়ারবাজারে সুফলভোগীরাও নতুন বিনিয়োগ থেকে সরে এসেছে। উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের শেয়ার আরও লোভনীয় দামে কিনে নিতে পতনকে ত্বরান্বিত করতে চাচ্ছে। তবে সরকার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বিতর্কিত করতে কারসাজি চক্রের সদস্যরাও পরিকল্পিতভাবে শেয়ারবাজারের পতন ঘটাচ্ছে বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার একটি সূত্র দাবি করেছে।

শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ঘাটতি রয়েছে। রয়েছে ভালো কোম্পানির অভাব। সেই সঙ্গে শেয়ারের বিপরীতে দেওয়া ঋণ সুবিধা (মার্জিন ঋণ) বাজারের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানের পতনরোধে নিয়ন্ত্রক সংস্থাও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। উল্টো নানা ইস্যুতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জের সঙ্গে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার মতবিরোধ প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। সার্কিট ব্রেকার, নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্ত, টানা দুই বছর লভ্যাংশ না দেওয়া কোম্পানিগুলোকে জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানোসহ বেশ কিছু ইস্যুতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে স্টক একচেঞ্জ অংশীজনদের দ্বিমত চরম আকার ধারণ করেছে। যদিও প্রকাশ্যে সংস্থাগুলো বিএসইসির বিরোধিতা করছে না। আবার সেভাবে সূচকের পতন রোধে সক্রিয় অংশগ্রহণও করছে না। নিয়ন্ত্রক সংস্থার মতে, তারল্য সংকটের সঙ্গে  কারসাজি চক্রের সদস্যরাও অল্প দামে শেয়ার হাতিয়ে নিতে শেয়ার দর কমাচ্ছে।

করোনাকালে ২০২০ সালের মে মাসে শিবলী রূবাইয়াত ইসলামের নেতৃত্বে কমিশন গঠনের পর শেয়ারবাজারে নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হয়। প্রতিদিন লেনদেন সূচক বাড়তে থাকে। সাধারণ বিনিয়োগকারীর মুখেও হাসি  ফোটে। নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন দেশে রোড শোর আয়োজন করতে থাকে। এর মধ্যেই  ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে বড় দরপতন রোধে বিএসইসি সার্কিট ব্রেকার চালু করেছিল। দীর্ঘদিন পর ব্রোকার মার্চেন্ট ব্যাংকারদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি ছয়টি কোম্পানি বাদে সবগুলোর ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের সময় অংশীজনরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে নতুন বিনিয়োগে আসবে প্রতিষ্ঠানগুলো। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর কিছু প্রতিষ্ঠান কথা রাখলেও বেশিরভাগই প্রতিশ্রুতি রাখেনি। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির মুখে  পড়েন। তখন নগদ টাকার সংকট সুশাসনের অভাবের ধুয়ো তুলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা হাত গুটিয়ে থাকে। ফলে টানা সূচকের পতন অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যেই ইসরাইলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান এবং ইসরাইলও ইরানের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। ফলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মধ্যপাচ্য পরিস্থিতি। পতনের ধারা আরও তীব্র হয়।

কোনোভাবেই বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি আটকাতে না পেরে সর্বশেষ গত বুধবার শেয়ার লেনদেনে নতুন সার্কিট ব্রেকার চালু করে। এতে  বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। লেনদেন শুরুর পরপরই আতঙ্কে দিনের সর্বনি¤œ দামে বিপুল শেয়ার বিক্রির আদেশ দেন বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ। ফলে লেনদেন শুরুর কয়েক মিনিট পরেই ক্রেতা সংকটে পড়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠান। এটিই গত একমাস ধরে চলা শেয়ারবাজারের চিত্র। নানা প্রচেষ্টার পরও প্রতিদিনই এমনটি ঘটছে।

গত ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস তোলার পর থেকে থেমে থেমে নিয়মিত পতন হচ্ছে সূচকের। ধারাবাহিক দরপতনে গত  তিন মাসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূলধন কমেছে ৮৮ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। সময় বাজারের ৮৩ শতাংশ কোম্পানি ফান্ডের দর কমেছে।

বিএসইসির একটি সূত্র দাবি করেছে, দেশের শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের পতনের পেছনে নতুন কৌশলে কারসাজি করছে একটি দুষ্ট চক্র। তাদের হাতে থাকা কোম্পানিগুলোর শেয়ার ইচ্ছাকৃতভাবে এক বিও হিসাব থেকে লোকসানে বিক্রি করে অন্য নামের বিও হিসাব থেকে নিজেই ক্রয় করেন। ফলে বাজারে অস্থিরতা  বাড়িয়ে আবার সেসব শেয়ার আরও কম দামে কিনে নেয় এসব চক্র। এতে মূল্যসূচকের পতনে তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের পাশাপাশি কম দামে বিক্রীত শেয়ার কিনে তারা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে তুলছে। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সার্ভেইল্যান্স টিমের অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বিএসইসি সূত্র জানায়, এসব কারসাজিতে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এসব কারসাজির সঙ্গে জড়িত ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে চিহ্নিত করে যোগ্য বিনিয়োগকারী হিসেবে আইপিও কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। একই সঙ্গে যেসব ব্যক্তি এসব কারসাজির সঙ্গে জড়িত তাদেরকে জরিমানার আওতায় নিয়ে আসা হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান এসব কারসাজির সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জড়িত প্রমাণিত হলে সেসব প্রতিষ্ঠানের (ব্রোকারেজ মার্চেন্ট ব্যাংক) সনদ নবায়ন স্থগিতসহ শীঘ্রই কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, একটি বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ার ৩৫০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়। দুষ্ট চক্রের হাতে থাকা এই কোম্পানির শেয়ার তারা একটি বিও থেকে লোকসানে বিক্রি করে একই সুবিধাভুগী ব্যক্তির অন্য নামে আরেকটি বিও হিসাবে কম দামে শেয়ার ক্রয় করে। ফলে শেয়ারবাজারের মূল্যসূচকে বড় প্রভাব পড়ে। বাজারে নেতিবাচক প্রভাব দেখে ওই কোম্পানির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে তাদের হাতে থাকা শেয়ার আরও কম দামে বিক্রি করে দেয়। এই সুযোগটাই লুফে নেয় সূচকের পতনের নেপথ্যে নতুন কারসাজি চক্র। তারা বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার আরও কম দামে কিনে মুনাফা লাভের জন্য ফন্দি আঁটছে। ফলে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারী।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বড় মূলধনী কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে নেতিবাচক প্রভাব অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারের দামেও পড়ে। এসব কোম্পানির শেয়ারদর সামান্য কমলেও সূচকে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যেমন আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে তেমনি কম দামে শেয়ার বিক্রির চাপে লাগাতার পতন কাটিয়ে উঠতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। তবে বাজারে তারল্য প্রবাহ কম থাকায় কোনোভাবেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। অবস্থায় বাজারে তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। সাধারণত শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা দুই ভাবে বিনিয়োগ করে থাকেন। একটি শ্রেণি নিজেদের জমানো টাকা বিনিয়োগ করে। আরেক শ্রেণি নিজেদের বিনিয়োগের পাশাপাশি শেয়ার জিম্মায় রেখে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে, যামার্জিন লোননামে পরিচিতি। ধরনের ঋণ নিয়ে যারা বিনিয়োগ করেন, তাদের শেয়ারের দাম একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নামলেই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ঋণের সমপরিমাণ শেয়ার বিক্রি করে দেয়। শেয়ারবাজারে ধরনের বিক্রিকে বলা হয় ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রি। শেয়ারবাজারে যত পতনের ধারা বাড়ছে, ফোর্সড সেলের চাপ তত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তবে বিএসইসির সঙ্গে সাধারণ বিনিয়োগকারী এবং অংশীজনরা বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে একমত হতে পারছেন না। বিনিয়োগকারী বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এভাবে শেয়ারের দাম কমার ক্ষেত্রে মূল্যসীমা বা সার্কিট ব্রেকারের সীমা কমিয়ে দেওয়ায় বাজারে আরও বেশি দরপতন হয়েছে। কারণ এই সীমা কমিয়ে দেওয়ার ফলে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না। আবার শেয়ার বিক্রি না হওয়ায় নতুন শেয়ার কিনতেও পারছেন না। ফলে সীমা আরোপের সিদ্ধান্ত বাজারে আরও বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

শেয়ারবাজারে দরপতন রোধে গত সোমবার অংশীজন ( স্টেকহোল্ডার) নিয়ে বৈঠক করে বিএসইসি। বৈঠকে মার্জিন ঋণ সমস্যা বর্তমানে বাজারের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানানো হয়। ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধসে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিপুল ঋণ আটকে গেছে। এসব ঋণ আদায় হচ্ছে না, আবার ঋণ নেওয়া অনেক বিনিয়োগকারীরও কোনো হদিস নেই। অথচ এক যুগের বেশি সময় ধরে এসব ঋণকে হিসাবভুক্ত করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেক সময় অনাদায়ী এসব ঋণ হিসাব নিয়েও নানা ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটছে। কারণে ঋণনীতির আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়। ওই বৈঠকের পরের দিনও বাজারে বড় পতন হয়।

গত বুধবার শেয়ারবাজারে মার্চেন্ট ব্যাংক স্টক ব্রোকারগুলোর গ্রাহকের (বিনিয়োগকারী) মার্জিন ঋণ হিসাবের আদায় না হওয়া লোকসানের (নেগেটিভ ইক্যুইটি) বিপরীতে প্রভিশন রাখার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। যেসব স্টক ব্রোকার মার্চেন্ট ব্যাংক মক্কেলের পোর্টফোলিও পুনর্মূল্যায়নজনিত অনাদায়ী ক্ষতির বিপরীতে রাখা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে পারেনি, তাদের তা সংরক্ষণের জন্য ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।

বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মনোভাব হলো- নিয়ন্ত্রক সংস্থা চাইলে দরপতন রুখতে পারে এবং দরপতন হলে তা রুখে দেওয়া সংস্থারই দায়িত্ব। যদিও শেয়ারদর বাড়ল নাকি কমল- তা শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার দেখার বিষয় নয়। অস্বাভাবিক কারণে বা কারসাজি করে শেয়ারবাজারে দর পতন উস্কে দিলে বা দর বাড়ালে তা এই সংস্থার দেখার বিষয়। বিশ্বের সব দেশের শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এভাবেই কাজ করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজার যেভাবে পরিচালিত হয়, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে এর উল্টোটা ঘটে। দরপতন হলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারাই বেশি উদ্বিগ্ন হন। তারাই আগ বাড়িয়ে শেয়ারবাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ তৈরি করেন। তারাইমিটিং-সিটিংকরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অযৌক্তিক ধারণা আশাবাদ তৈরি করেন। বিভিন্ন সময়ে বিএসইসির নির্দেশনায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় কৃত্রিমভাবে বাজার টেনে তোলার চেষ্টা করা হয়। যদিও তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে না। দিনশেষে ক্ষতিগ্রস্ত হন বিনিয়োগকারী।

পূবালী ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিইও মোঃ আহসানউল্লাহ বলেন, শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। এছাড়া কোনো বিষয়ে স্থির সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। হুটহাট সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাহীনতা বাড়ে। সঠিক সময়ে বিনিয়োগকারীরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের একসঙ্গে বিনিয়োগযোগ্য সব টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা উচিত নয়। শেয়ারবাজারের সঙ্গে লোকসানের আশঙ্কা কম আছে এমন খাতেও তাদের বিনিয়োগ করা উচিত।

শেয়ারবাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে বিএসইসির নতুন সার্কিট ব্রেকার চালুর সমালোচনা করে অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, সার্কিট ব্রেকার দিয়ে কোনোভাবেই ঠিক করেনি কমিশন। তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বাজারের জন্য প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নিতে পারত তার মতে, শেয়ারবাজারে ভাল করতে চাইলে দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। হুটহাট পদক্ষেপ নিয়ে  দীর্ঘমেয়াদে বাজারের ক্ষতি হয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ডিএসইর সাবেক সভাপতি আহমেদ ইকবাল হাসান বলেছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার মূল কাজ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা; বাজারে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা বা নিশ্চিত করা; এবং ঝুঁকি বা অনিশ্চয়তার বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের অবহিত করা বা জানানোর চেষ্টা করা। কিন্তু বিগত সময়ে এসব করতে পারেনি। তিনি বলেন, সিকিউরিটিজ রুলস অনুসারে বিএসইসির কাজ করা উচিত।

×