ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যয় ৪৩২ কোটি টাকা

সিলেটের তিন সড়ক জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১ জুন ২০১৬

সিলেটের তিন সড়ক জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারী অর্থায়নে প্রায় ৪শ’ ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ সিলেট বিমানবন্দর-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ক জাতীয় মহাসড়কমানে উন্নীত করা হচ্ছে। মঙ্গলবার নির্মাণকাজ শুরুর লক্ষ্যে রাজধানীর হোটেল রেডিসনে চুক্তি স্বাক্ষর করে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ ও স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি এবং শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার আসন্ন বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত অগ্রাধিকার পাচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ থাকছে পরিবহন খাতে। এরপরই জ্বালানি ও শিক্ষা খাত। অর্থমন্ত্রী বলেন, সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়ক দিয়ে পাথর পরিবহন করা হয়। তাই সড়কটিকে মজবুত করে নির্মাণ করতে হবে। সড়কটির উন্নয়ন কাজ চুক্তি অনুযায়ী ৩৪ মাসের মধ্যে শেষ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থে এ সড়কের প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করা হবে। মন্ত্রী প্রকল্প বাস্তবায়নকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করার বিষয়ে খোঁজখবর রাখার পরামর্শ দেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, যে কোন সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর থেকে পরবর্তী তিন বছর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থাকবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের ওপর। এ বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করতে চায়। চুক্তিপত্রে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের সিলেট জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক ইফতেখার কবির এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খান মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন নিজ নিজ পক্ষে সই করেন। সড়ক উন্নয়নে সই হওয়া দুটি প্যাকেজের চুক্তিমূল্য ৪১৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর আওতায় প্রায় ৩০ কি.মি. সড়ক বাঁধ, ১৩ কি.মি. সড়ক রিজিড পেভমেন্ট, ১৭ কি.মি. ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট, ১টি সেতু ও ২টি কালভার্ট, প্রায় ৩০ কি.মি. ফুটপাথসহ ড্রেন নির্মাণ এবং অন্যান্য কার্যাদি সম্পন্ন করা হবে। চুক্তি অনুযায়ী ৩৪ মাসের মধ্যে সড়ক উন্নয়নের কাজ শেষ করবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, এমরান আহম্মেদ এমপি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এমএএন ছিদ্দিক, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. একেএ মোমেন, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে হাসান আলম, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, শফিকুর রহমান প্রমুখ। অর্থমন্ত্রী বলেন, কোম্পানীগঞ্জ সিলেটের এমন একটি উপজেলা, যার একটি আলাদা বিশেষত্ব আছে। অধিবাসীদের অর্ধেকেরও বেশি সিলেটের আদি বাসিন্দা নয়। নেতৃত্বেও তারা জোর কদমে বহাল আছেন’। কোম্পানীগঞ্জের বহুদিনের দুঃখ ছিল সড়কটি। প্রচুর পর্যটকও সেখানে ভিড় করেন। পাথরের বড় সরবরাহ কোম্পানীগঞ্জ থেকে আসে। এজন্য রাস্তাটি যথাযথভাবে নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, কোম্পানীগঞ্জের জন্য সুদৃশ্য এবং বড় রাস্তা বানিয়েছে- এটা যেন বলা যায়’। অনুষ্ঠানে প্রকল্পের তথ্য জানিয়ে বলা হয়, স্পেকক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড দু’টি প্যাকেজে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রথম প্যাকেজের চুক্তিমূল্য ১৯০ দশমিক ০৫ কোটি টাকা, যা দেবে বাংলাদেশ সরকার। প্যাকেজের আওতায় ১৩ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার সড়ক বাঁধ, ১৩ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার রিজিট পেভমেন্ট, ১ লাখ ৬১ হাজার ৯৯৬ বর্গমিটার রক্ষাপ্রদ কাজ, ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫৭ মিটার কম্পেকটেড স্টোন কলাম, ২ হাজার ৬১২ মিটার ফুটপাথসহ ড্রেন, ৪ হাজার ৪৪৪ মিটার টো-ওয়াল এবং আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল কাজ করা হবে। দ্বিতীয় প্যাকেজে একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২২৫ দশমিক ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ দশমিক ৭২ কিলোমিটার সড়ক বাঁধ, ১৬ দশমিক ৭২ কিলোমিটার সড়ক ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণ, ৭৫ মিটার ১টি সেতু নির্মাণ, ২টি কালভার্ট নির্মাণ (৬ মিটার), ২ লাখ ২০ হাজার ৮৪ বর্গমিটার রক্ষাপদ কাজ, ২ লাখ ৬১ হাজার ২৮৮ মিটার কম্পেকটেড স্টোন কলাম, ২৬ হাজার ৭৪০ মিটার ফুটপাথসহ ড্রেন, ১০ হাজার ৪৩০ মিটার টো ওয়াল এবং আরসিসি রিটেনিং ওয়াল কাজ করবে।
×