
সৌন্দর্যে ভরা কুয়াকাটা ঝিনুক বিচ পর্যটকদের জন্য উন্মোচিত স্বর্গ
পটুয়াখালীর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার চর গঙ্গামতি সৈকতের ধুধু বালুচরে প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে অজস্র ছোট ছোট মৃত ঝিনুকের খোলস। শুধু গঙ্গামতিতেই নয়, কুয়াকাটার বিস্তীর্ণ ৩২ কিলোমিটার সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে একই চিত্র—জলে ভেসে আসা ঝিনুকের স্তূপে ঢেকে যাচ্ছে সৈকতের বিস্তীর্ণ এলাকা।
স্থানীয়রা বলছেন, এই ধরনের ঝিনুক আগেও দেখা যেত, তবে এবছর সংখ্যায় অনেক বেশি। ঝিনুকগুলো ছোট আকারের হওয়ায় তা বাণিজ্যিকভাবে তেমন কাজে আসছে না, কিন্তু প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্য এর তাৎপর্য নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
চর গঙ্গামতির জেলে মহসিন বলেন, “আগে বড় ঝিনুক পাওয়া যেত, সেগুলো বিক্রিও করতাম। এখন শুধু ছোট ছোট খোলস পড়ে থাকে, যা ঢেউয়ের সঙ্গে আবার সরে যাচ্ছে।”
একই এলাকার জেলে মামুন জানান, “এতো পরিমাণে ঝিনুকের খোলস আগে কখনও দেখিনি। এদের কোনো ব্যবহার নেই বললেই চলে।”
পর্যটক দম্পতি নীলিমা রানী বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে কুয়াকাটা বেড়াতে এসেছি স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনে গঙ্গামতি বেড়াতে আসি
এখানকার প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে মন জুড়িয়ে যাচ্ছে যেদিকে তাকাই শুধু সাদা ঝিনুক আর ঝিনুক দু চোখে দেখা যাচ্ছে। আমরা দেখে গেলাম
পরিবারের সদস্যদের জন্য এখান থেকে কিছু ঝিনুক কুড়িয়ে নিয়ে গেলাম।
পরিবেশ বিষয়ক সংগঠক বিডিক্লিন সমন্বয়ক সাংবাদিক আসাদুজ্জামান মিরাজ বলেন,প্রাকৃতিক নিয়মে ঝিনুক ভেসে আসে, কিন্তু এ বছর সংখ্যার এই অস্বাভাবিকতা নিয়ে আমরা চিন্তিত। বিষয়টি নিয়ে যথাযথ বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রয়োজন আছে। ঝিনুকের খোলস সৈকতের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিনা তাও খতিয়ে দেখা উচিত।”
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের খেপুপাড়া নদী উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.অভিজিৎ বসু জানান, “সমুদ্রের গভীরে থাকা ঝিনুক সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা পরিবর্তনসহ নানা কারণে মারা যেতে পারে। তবে সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে হলে ল্যাবভিত্তিক গবেষণা প্রয়োজন।”
সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সাদা ঝিনুকের এই আস্তরণ যেমন পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়েছে, তেমনি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে পরিবেশবিদদের মধ্যে। এখন প্রয়োজন দ্রুত ও নিরপেক্ষ বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ।
তাসমিম