
ছবিঃ সংগৃহীত
গলায় ফাঁস দিয়েছেন স্ত্রী—এমন কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যান স্বামী। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা গেছেন স্ত্রী তানিয়া আক্তার। এই কথা শুনে তড়িঘড়ি করে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান স্বামী সুমন মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে, নরসিংদীর বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের খামারের চর কান্দাপাড়া এলাকায়। নিহত মহিলার নাম তানিয়া আক্তার (২৪)। তিনি পাশ্ববর্তী রায়পুরা উপজেলার মরজাল মধ্যপাড়া এলাকার রুস্তম আলী প্রধানের মেয়ে। স্বামীর বাড়ির লোকজনের দাবি আত্মহত্যা হলেও, নিহতের পরিবার ও স্বজনদের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে তার স্বামী হত্যা করেছেন।
জানা যায়, আলকাছ মিয়ার ছেলে সিঙ্গাপুর প্রবাসী সুমন মিয়ার সঙ্গে ৮ বছর আগে বিয়ে হয় তানিয়া আক্তারের। তাদের আড়াই বছর ও ৯ মাস বয়সি দুটি সন্তান রয়েছে।
ঘটনার পূর্বে স্বামীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি করে ঘরের ভিতরে গিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেন তানিয়া আক্তার। পরে স্বামীর বাড়ির লোকজন তাকে নামিয়ে পাশ্ববর্তী বারৈচা গ্রীন লাইফ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক পরীক্ষা করে জানান, তিনি ইতোমধ্যে মারা গেছেন। এই খবর শুনে স্বামী সুমন মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।
খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেলাবো থানা এসআই মোঃ মাহবুবুর রহমান।
নিহতের মা মজিদা বেগম বলেন, “আমার মেয়েকে তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে হাসপাতালে রেখে পালিয়েছে। আমি তাদের বিচার চাই।”
নিহতের শাশুড়ি শাহারা খাতুন বলেন, “তাদের মধ্যে কী নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে, আমি জানি না। তবে সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ দেখতে পাই, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে তানিয়া ফাঁস নিয়েছে। পরে আমি ও আমার দেবর তাকে নিচে নামাই।”
বারৈচা গ্রীন লাইফ হাসপাতালের (আরএমও) আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাসুম বিল্লাহ জানান, অজ্ঞান অবস্থায় নিহতের স্বামী তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। প্রাথমিক পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মৃত্যুর খবর শুনে স্বামী ও তার স্বজনরা কৌশলে পালিয়ে যান।
বেলাব থানার এসআই মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে আসি। প্রাথমিক সুরতহালে নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
ইমরান