ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

তিস্তার পাড়ে জমেছে বাদামের হাট, কিন্তু নেই ক্রেতা, চিন্তায় বিক্রেতারা

জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, উলিপুর, কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ২৫ জুন ২০২৫

তিস্তার পাড়ে জমেছে বাদামের হাট, কিন্তু নেই ক্রেতা, চিন্তায় বিক্রেতারা

দৈনিক জনকণ্ঠ

কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তার তীরে অস্থায়ী কাঁচা বাদামের হাট বসেছে। বাদামের এ হাট নির্দিষ্ট কোনো স্থানে স্থায়ীভাবে বসানো হয় না। প্রতিবছর হাটের স্থান পরিবর্তন হয়ে থাকে। মূলত নৌঘাটের ওপর নির্ভর করে বাদামের হাটটি বসানো হয়।

তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে পানিয়ালের ঘাটের উপর পাকার মাথায় বসানো হয়েছে এ হাট। গত বছর বাদামের হাট বসানো হয়েছিল থেতরাই বাজার গোলচত্বর নামক স্থানে। তবে বাজারে বাদামের চাহিদা কম থাকায় চিন্তিত বিক্রেতারা।

নৌঘাটের পাশে বাদামের হাট বসানোয় যাতায়াত পরিবহনে ভাড়া কমায় লাভবান হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে বাদাম ক্রয় করে থাকেন। বালুচর ডিঙিয়ে বাদাম বহন করে মূল বাজারের মধ্যে বিক্রি করতে চাষিদের অনেক বেগ পেতে হতো। তাই তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় বাদামের হাট বসায় খুশি ক্রেতা ও বিক্রেতা।

 সরেজমিনে বুধবার (২৫ জুন) বিকালে থেতরাই ইউনিয়নের তিস্তার তীরবর্তী পাকার মাথায় গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা বাদামের জমজমাট হাট বসেছে। বস্তা ভর্তি বাদাম নিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা।

তবে ক্রেতা উপস্থিতি কম থাকায় বাদাম বিক্রি করতে বেগ পোহাতে হচ্ছে বিক্রেতাদের। তারা বলেন, ইউনিয়নের বাহির থেকে ক্রেতা আসলে বাদামের চাহিদা অনেক বেড়ে দামও অনেক ভালো পাওয়া যায়।

এছাড়া এবারে তিস্তার পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাদামের ক্ষেত তলিয়ে যায়। ফলে অনেক বাদামের রং পরিবর্তন হয়। ফলে বাদামের দাম অনেক কমে যায়। দ্বিগুণ লাভের আশা থাকলেও এবার তেমন বেশি লাভ পাওয়া যাবেনা।

বিক্রেতা কৃষক আমিনুল ইসলাম (৩৫) বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারে ফলন কম হয়েছে। তারপরেও তিন একর জমিতে ১লক্ষ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে ৭৫ মণ বাদাম পেয়েছি। বাদাম বিক্রি করেছি মণ প্রতি ৩ হাজার ৩ শত টাকা।

এই দরে বেচলেও মোট আয় হবে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। তিনি আরও বলেন, বাদাম চাষের জমিতে অন্য ফসলের ফলনও আশানুরূপ পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি। 

পাইকারিতে ক্রয় করা রেজাউল ইসলাম বলেন, তিস্তার তীরবর্তী পাঁকার মাথায় কাঁচা বাদামের অস্থায়ী হাটে বাদাম ক্রয় বিক্রয় চলছে। এবারে বাদামের বাজারদর একটু কম। বেঁচাকেনা অনেক কম হচ্ছে। দাম কম হওয়ার বিষয় তিনি বলেন, এবারে বাদামের রং বেশি ভালো না থাকায় দাম চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এখনো বাজার কম থাকলেও পরবর্তীতে দাম বৃদ্ধি পাবে।

কাঁচা বাদাম ক্রয় করতে আসা মহুবর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারে বাজার একটু কম। এখন মৌসুম থাকায় বাদামের চাহিদাও অনেক কম।

তবে আরও কিছুদিন পরে বাদামের চাহিদা ও দাম বৃদ্ধি পাবে। হাট ইজারাদার নুরে আলম সিদ্দিক বলেন, তিস্তার তীরবর্তী পাকার মাথায় অস্থায়ী কাঁচা বাদামের হাট বসানো হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন বলেন, বাদাম চাষ করে চরের কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বাদাম ঘরে তোলার পর কৃষকেরা জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করেন। কৃষি বিভাগ থেকে চরের চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হয়।

হ্যাপী

×