বাগেরহাটে নির্মাণ কাজের ধীরগতির কারণে দশানী–রামপাল–মোংলা সড়কের বেহাল দশায় চলাচলে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। সংস্কারের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি, রাস্তার উপর এলোমেলো খোয়া ও কিছু দূর পরপর বড় বড় গর্তে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অতিদ্রুত জনদুর্ভোগ নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে বাগেরহাট শহরের দশানী ট্রাফিক মোড় এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনকারীরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্স-এর কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে দ্রুত কাজ সমাপ্তের দাবি জানান। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা আমির আলী বিশ্বাস বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। রাস্তায় চলাচলের কোনো উপায় নেই। যখন-তখন দুর্ঘটনা ঘটছে। অতিদ্রুত এই সড়কের সংস্কার শেষ করা দরকার।”
সাইফুল ইসলাম নামের একজন বলেন, “কোনো রোগীও এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে পারে না। শুকনো সময়ে বাড়িঘর ধুলোয় ভরে যায়, আর বর্ষাকালে কাঁদা-পানিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।”
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৩৩.৮৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাগেরহাট–রামপাল–মোংলা আঞ্চলিক মহাসড়কটি প্রশস্তকরণ, সম্প্রসারণ ও সংস্কারের জন্য ৪টি প্যাকেজে বিভক্ত করে ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২০২২ সালের আগস্ট মাসে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ৮টি সেতু, ২১টি কালভার্ট ও জমি অধিগ্রহণ। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৭ কোটি টাকা।
প্রথম প্যাকেজে দশানী থেকে হেলাতলা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কের কাজের দায়িত্বে ছিল মাহবুব ব্রাদার্স। দুই দফা সময় বাড়ানো হলেও তারা ২০ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি।
বাগেরহাট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, “গত ২২ মে মাহবুব ব্রাদার্সের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। নতুন ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। এই সড়কের ৪টি প্যাকেজের মধ্যে তিনটির কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। কিন্তু প্রথম প্যাকেজে দুই দফা সময় বাড়ানো সত্ত্বেও কাজ শেষ করতে না পারায় বিধি মোতাবেক ওই ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করা হয়েছে। আমরা খুব শিগগিরই নতুন দরপত্র আহ্বান করব। সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।”
সজিব
