ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল, উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে করছেন নাচানাচি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ০০:৪০, ২৪ জুন ২০২৫

কুয়াকাটায় পর্যটকের ঢল, উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে করছেন নাচানাচি

ছবি: জনকণ্ঠ

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের এখন বিশ্বজোড়া পরিচিতি। রয়েছে স্বকীয়তার আলাদা সুখ্যাতি। দীর্ঘ সৈকতের যে কোনো স্পটে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যায় দেখা যায় সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য।

আর সকালে একই সৈকতের গঙ্গামতি লেকপাড়ের বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে দেখা যায় অপূর্ব মনোরম সূর্যোদয়ের বিরল দৃশ্য। এই দুর্লভ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ্য কুয়াকাটা সৈকতের বেলাভূমিতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে পর্যটকের পদচারণা। মুখরিত থাকে দীর্ঘ সৈকত পর্যটক দর্শনার্থীর হৈ-হুল্লোড় আর উৎসবে। শীতে থাকে উপচে পড়া ভিড়।

এখন বর্ষায়ও বিপুল সংখ্যক পর্যটক দর্শনার্থীর আগমন বাড়ছে কুয়াকাটায়। পর্যটকের কাছে শীতের শান্ত সাগরের চেয়ে বর্ষার উত্তাল সাগর অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। খুঁজে পান যেন আসল চেহারা কখনও ভয়াল তাণ্ডব, কখনও শান্ত। মুহূর্তেই পাল্টে যায় চেহারা। এই গর্জন, আবার থমকে যাওয়া। তাই বর্ষায় এখানে বাড়ছে পর্যটক দর্শনার্থীর ভিড়।

উত্তাল ঢেউরাশির সঙ্গে মেতে ওঠা, সাগরের পানিতে নেমে বিক্ষুব্ধ ঢেউয়ের সঙ্গে নাচানাচি, মাখামাখি প্রতিদিন শত শত পর্যটক এখন বেছে নিচ্ছে বর্ষা মৌসুমকে। কারণ পাহাড়সম উঁচু ঢেউ অনবরত কিনারে এসে আঘাত হানছে বেলাভূমিতে। কিনারে আসার আগেই সেই উত্তাল ঢেউয়ের তালে কখনও ডুব দিয়ে বাধা দেওয়া, কখনও ঢেউয়ের আঘাত থেকে এড়াতে ডুব দিয়ে নিজেকে আড়াল করা বারবার, বহুবার। পর্যটকের বিরামহীন এমনসব দৃশ্য এখন কুয়াকাটা সৈকতে নিত্যদিনের চিত্র।

গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, আকাশে শো শো করে ছুটে চলা কালো মেঘ, হালকা মৌসুমী বায়ুর স্পর্শ মিলে এক অন্যরকম অনুভূতি এনে দেয়। বর্ষায় কুয়াকাটার সৈকতে দেখা মেলে ইলিশ শিকারিদের যুদ্ধ। ছোট্ট ডিঙি নৌকায় চড়ে জেলেরা অগভীর সমুদ্রে গিয়ে পাতা জালে মাছ ধরে। ভয়াল সাগরের ঢেউ অতিক্রম করে চলে তাদের জীবনযুদ্ধ।

বর্ষার কুয়াকাটায় থাকে স্বচ্ছ বেলাভূমি, নীট অ্যান্ড ক্লিন সৈকত। খালি পায়ে হাঁটার যে সুখ, সেটি বর্ষায়ই বেশি উপলব্ধি করা যায়। বীচ ঘেঁষা তাল-নারকেল আর ঝাউ গাছগুলো যেন জীবন্ত সবুজের সমারোহ। গঙ্গামতির লেক বর্ষায় ফিরে পায় যৌবনের গান। লাল কাঁকড়ার মিছিল দেখে পর্যটকরা মুগ্ধ হন, আবার দৌড়ে তাদের ধাওয়া করেন। বর্ষার কুয়াকাটা এখন শুধু শীতের পর্যটন নয়, বছরজুড়ে পর্যটনের গন্তব্য।

বর্ষায় হোটেলগুলোতে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট মেলে, খাবারের দামও নাগালের মধ্যে থাকে। আগাম বুকিং ছাড়াই অনায়াসে সিট মেলে হোটেলে। পর্যটকরা নির্বিঘ্নে ঘুরে দেখতে পারেন রাখাইন পল্লী, শ্রীমঙ্গল ও সীমা বৌদ্ধবিহার, প্রাচীন কুয়া, গঙ্গামতি লেক, ফাতরার বনাঞ্চল, লেম্বুর বনাঞ্চল, মহিপুর-আলীপুর মৎস্যবন্দর, পায়রা বন্দর ও তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র।

যাতায়াত: ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে অত্যাধুনিক বাসে মাত্র ছয় ঘণ্টায় কুয়াকাটা পৌঁছানো যায়। সদরঘাট থেকে লঞ্চে বরিশাল বা পটুয়াখালী হয়ে বাসে কুয়াকাটা। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে।

শহীদ

×