ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

আসিফ মাহমুদ

স্বৈরাচারী সরকার তরুণদের ভবিষ্যৎ ছিনিয়ে নিয়েছিল

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৩৪, ২৪ জুন ২০২৫

স্বৈরাচারী সরকার তরুণদের ভবিষ্যৎ ছিনিয়ে নিয়েছিল

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া

বিগত স্বৈরাচারী সরকার তরুণদের ভোটাধিকার হরণ করেছিল, তাদের কণ্ঠরোধ করেছিল ও তাদের ভবিষ্যৎ ছিনিয়ে নিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘কমনওয়েলথ চার্টার যুব কর্মশালা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের ইতিহাসে এমন অন্ধকার অধ্যায় রয়েছে যেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, জোরপূর্বক গুম ও নির্বাচনে হস্তক্ষেপ অসংখ্য পরিবারকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে।
তিনি আরও বলেন, অনেক তরুণ প্রজন্ম কখনও একটি স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বাদ পায়নি, এমনকি অনেকেই কখনও ভোট দেওয়ারও সুযোগ পায়নি। তাদের কণ্ঠস্বর চেপে দেওয়া হয়েছিল, তাদের ভবিষ্যৎ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরও, তরুণরাই ছিল সেই আলোক বর্তিকা যারা একটি নতুন যুগের জন্য সংগ্রাম করেছিল, গণতন্ত্র ও ন্যায় বিচারের দাবিতে আন্দোলন করেছিল। তাদেরই সাহস ও ত্যাগের বদৌলতে আজ আমরা একটি স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্ত হয়েছি।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমরা অনুভব করেছি যে, শুধুমাত্র একটি শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তন করাই যথেষ্ট নয়। এটি একটি জাতীয় আকাক্সক্ষারও বিষয়। তাই আমরা ব্যাপক সংস্কারমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যেই বেশ কিছু কমিশন গঠন করা হয়েছে, যারা বিভিন্ন স্তরের স্টেকহোল্ডার, বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। কিছু প্রস্তাবনা ইতোমধ্যেই বাস্তবায়নের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে, অন্যগুলো নিয়ে কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে গণতন্ত্র কখনই বিপন্ন হবে না, যেখানে প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার, স্বাধীনতা ও মর্যাদা সুরক্ষিত থাকবে। কিন্তু এটি শুধুমাত্র সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়; এজন্য প্রয়োজন সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ, বিশেষত তরুণ প্রজন্মের।
কমনওয়েলথ নিয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, কমনওয়েলথ চার্টার হলো আমাদের সম্মিলিত বিশ্বাসের একটি মৌলিক দলিল যা আইনের শাসন, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারকে তুলে ধরে। এটি একটি নৈতিক কম্পাস, যা আমাদের ৫৬টি সদস্য রাষ্ট্রকে একই লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, এই চার্টার কেবল আদর্শিক নীতিমালা নয়, বরং এগুলোকে প্রতিদিনের জীবনে বাস্তবায়ন, রক্ষা ও লালন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক কমনওয়েলথের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক লুইস ফ্রান্সেসি বলেন, আপনি আজ যা করবেন, তা-ই আপনাকে গড়ে তুলবে এবং আগামী ৩০ বছরে আপনি কী হয়ে উঠবেন তা নির্ধারণ করবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে আপনার বর্তমান পছন্দের ওপর; সেই কাজগুলো করুন যা আপনাকে, আপনার পরিবারকে ও আপনার দেশকে গর্বিত করবে।

অধ্যাপক লুইস ফ্রান্সেসি বলেন, বাংলাদেশ বদলাচ্ছে, বিশ্ব বদলাচ্ছে, এবং আপনারা সেই পরিবর্তনের কারিগর। আসুন আমরা এই যাত্রায় একসঙ্গে কাজ করি- গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী, শাসন ব্যবস্থাকে আরও জবাবদিহিতামূলক ও সমাজকে আরও মানবিক করে গড়ে তুলতে।

×