ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

হত্যা, চাঁদাবাজি, লুটপাট, দুর্নীতি যারা করছেন তাদের প্রতিহত করুন: ফয়জুল করীম

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী

প্রকাশিত: ২৩:১৫, ২৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ২৩:১৭, ২৩ জুন ২০২৫

হত্যা, চাঁদাবাজি, লুটপাট, দুর্নীতি যারা করছেন তাদের প্রতিহত করুন: ফয়জুল করীম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, “হত্যা, চাঁদাবাজি, লুটপাট, দুর্নীতি যারা করেছে এবং এখনও করছে, তাদের প্রতিহত করতে হবে। গরীবের রিলিফের চাল গুদামে রেখে যারা ফায়দা লুটছেন, তাদের চিহ্নিত করে আগামী নির্বাচনে উচিত জবাব দিতে হবে।”

সোমবার (২৩ জুন) বিকেলে নীলফামারী পৌর মাঠে ইসলামী আন্দোলনের জেলা শাখা আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো গেলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ অর্থনীতির দেশ হতো। কিন্তু গত ৫৩ বছরে যারা দেশ পরিচালনা করেছেন (আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির নাম না নিয়ে), তারা লুটপাট, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করেছে।”

চরমোনাই পীর আরও বলেন, “আমরা আর কোনো ফ্যাসিস্টকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না। এক ফ্যাসিস্টকে যেভাবে বিদায় দিয়েছি, নতুন কেউ জন্ম নিলে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না।”

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আলেমদের ওপর কেউ আঙুল তুললে, কোরআন-হাদিস নিয়ে কেউ খেললে, বাংলার সাধারণ মানুষই জালিমদের তাড়িয়ে দেবে ইনশাআল্লাহ। ফেরাউন-নমরুদ টিকেনি, আপনারাও পারবেন না।”

তিনি অভিযোগ করেন, “বহু মানুষ ভাবছেন, আগামী দিনে অমুক দল ক্ষমতায় আসবে তবে তারা জানেন না, নৌকা চালাতে আওয়ামী লীগের কর্মীরা জানে না, ধান কাটতে বিএনপির লোকেরা জানে না, লাঙ্গল দিয়ে চাষ দিতে জানে না জাতীয় পার্টির নেতারা। তারা সবাই ধোকাবাজ।”

ফয়জুল করীম দাবি করেন, দেশের মানুষ, গ্রামের মানুষ ও ৩৮ শতাংশ নতুন ভোটার জানেন হাতপাখা কীভাবে চালাতে হয়।

গণসমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নীলফামারীর চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে। ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন নীলফামারী-২ (সদর): অ্যাডভোকেট হাসিবুল ইসলাম, নীলফামারী-৩ (জলঢাকা): আমজাদ হোসেন এবং নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরীগঞ্জ): আলহাজ্ব সহিদুল ইসলাম।

প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে ফয়জুল করীম বলেন, “ইসলামী আন্দোলনের কথা, কাজ ও মার্কার মধ্যে মিল আছে। আমরা ক্ষমতায় এলে এমন পরিবেশ তৈরি করব, যেখানে কেউ অবৈধ কিছু করার চিন্তাও করবে না।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাই মাসের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে, দুর্নীতিবাজ ও অর্থপাচারকারীদের বিচার করে তাদের রাজনীতিতে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।”

এ সময় ইসলাম, দেশ ও সমাজবিরোধী নারী কমিশন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন ও ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে সুদ-ঘুষমুক্ত কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিও জানান তিনি।

গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন নীলফামারী জেলা সভাপতি মুহাম্মাদ ইয়াছিন আলী এবং সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বিপ্লব।

অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর নীলফামারী জেলা আমির অধ্যক্ষ আব্দুস সাক্তার, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অ্যাডভোকেট এম. হাছিবুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, শ্রমিক আন্দোলনের তথ্যপ্রযুক্তি ও গবেষণা সম্পাদক মাওলানা আনিছুর রহমান এবং ছাত্র আন্দোলনের প্রকাশনা সম্পাদক মাইমুন ইসলাম মিঠুন প্রমুখ।

মিমিয়া

×