উপকূলীয় জেলা পিরোজপুরে বিড়াল ও কুকুরের কামড়ের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। গত পাঁচ মাসে জেলার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার কামড়আক্রান্ত রোগী। কিন্তু ভয়াবহ তথ্য হলো জেলা হাসপাতালে র্যাবিক্স ভ্যাকসিন নেই দীর্ঘ ৬ মাস ধরে! ফলে রোগীদের পড়তে হচ্ছে ভয়াবহ দুর্ভোগে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুর জেলার ৭ উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে প্রতিদিন কামড় খাওয়া রোগীরা আসছেন চিকিৎসার জন্য। তবে সরকারি হাসপাতালটিতে দীর্ঘদিন ধরে র্যাবিক্স ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) বিভাগ থেকে বারবার আবেদন করলেও কোনো ফল মেলেনি বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চরম এই সংকটে আশ্চর্য এক উপায়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন রোগীরা। বাইরে থেকে ৫২০ টাকা মূল্যের একটি ভ্যাকসিন ৪ জন রোগী মিলে কিনে নিচ্ছেন! কারণ, এক ভায়ালে থাকে চারটি ডোজ আর একবার ভেঙে ফেলার পর তা দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা যায় না।
সদর উপজেলার নামাজপুর গ্রামের কাকলি বেগম বলেন, “আমার চার বছরের মেয়ে ঘরে খেলার সময় বিড়ালের কামড়ে আহত হয়। হাসপাতালে এলে ডাক্তার বলেন, বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনে আনতে। এক ভায়াল চার ডোজের, তাই তিনজন রোগী খুঁজে নিয়ে একসাথে ভ্যাকসিন দিতে হয়েছে।”
মঠবাড়িয়া থেকে আসা আরেক অভিভাবক ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, “ছেলেকে নিয়ে জেলা হাসপাতালে এসেছি। কিন্তু এখানে ভ্যাকসিন নেই। বাহির থেকে কিনে দিতে হয়েছে, তাও একা নয়, আরো তিনজন রোগী জোগাড় করে!”
রোগীদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করেছেন পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. মতিউর রহমান। তিনি বলেন, “আমরা সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে সিডিসি বিভাগ থেকে চাহিদা অনুযায়ী ভ্যাকসিন আসছে না। দ্রুত সমস্যার সমাধানে আমরা কাজ করছি।”
প্রসঙ্গত, গত পাঁচ মাসে প্রায় ৭ হাজার কামড়আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন জেলা হাসপাতালে। গত দুই বছরে জলাতঙ্কে মৃত্যু হয়েছে অন্তত তিনজনের।
এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে পিরোজপুরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে জলাতঙ্ক ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এখনই প্রয়োজন জরুরি ভিত্তিতে র্যাবিক্স ভ্যাকসিন সরবরাহ শুরু করা।
মিমিয়া
