ছবি: প্রতীকী
সিলেটে দু’দিনের ব্যবধানে একাধিক ধর্ষণের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার রেশ না কাটতেই সিলেটে দুই গৃহবধূ ধর্ষণ, একজনকে হত্যা এবং এক কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সিলেটে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে তার স্বামী তাজুল হক (২৮)-কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। আটক তাজুল হক (২৮) হবিগঞ্জের বাহুবল থানার হাবিজ মিয়ার ছেলে এবং সিলেটের খাদিমপাড়ার আলা মিয়ার বাসার বাড়াটিয়া। পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে শাহপরাণ (রহ.) থানাধীন খাদিমপাড়া আলা মিয়ার কলোনি থেকে তাজুল হককে আটক করা হয়।
চার বছর আগে মনি আক্তার (২২)-কে বিয়ে করেন তাজুল হক। তাদের সংসারে ২ বছর ৬ মাস বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। পারিবারিক কলহ এবং পরকীয়ার সন্দেহে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। গত শনিবার দুপুরে স্বামী-স্ত্রী শাহপরাণ (রহ.) মাজার জিয়ারত শেষে বাসায় ফিরে ঘরের ভিতরে অবস্থান করেন।
পরে বিকেল ৩টা ৪৫ থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে কোনো এক সময় তাজুল হক তার স্ত্রীকে লাল রঙের টেট্রনের ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং মৃতদেহ পেছনের কক্ষে ঝুলিয়ে রেখে ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে বাইরে চলে যান।
ওইদিন বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে নিহতের ভাই মো. বাবলু মিয়া ঘরে এসে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে জানালা দিয়ে বোনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। একই সময়ে অভিযুক্ত তাজুল হককে পেছনের দরজা দিয়ে ঘরে ঢুকতে দেখা যায়।
এক নারীকে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় চারজনকে অভিযুক্ত করে গত ২১ জুন দক্ষিণ সুরমা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী।
অভিযুক্তরা হলেন, সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার নভাগ কামালবাজার গ্রামের মৃত আবু সালের ছেলে আবু সালমান ওরফে আবুল, একই গ্রামের মৃত মহিবুর রহমানের ছেলে মতিউর রহমান নাজমুল, মৃত আব্দুল হান্নানের ছেলে ফাহিম, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের আরশ আলীর স্ত্রী মাহমুদা বেগম। রবিবার (২২ জুন) রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পাঁচ সন্তানের জননী ভুক্তভোগীর স্বামী পঙ্গু। তিনি দক্ষিণ সুরমা উপজেলার একটি বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। গত ১৮ জুন রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ভুক্তভোগীকে সহকর্মী গৃহপরিচারিকা মাহমুদা আরেকটি বাসার কাজের কথা বলেন। এরপর মাহমুদা ভুক্তভোগীকে একটি প্রাইভেটকারে তুলে দেন। প্রাইভেটকারের ভেতরে তিন ব্যক্তি ওই নারীকে কয়েক দফায় শ্লীলতাহানি করেন।
প্রাইভেটকারটি দক্ষিণ সুরমার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে গিয়ে থামে। পরে ওই নারীকে সেখানে নামিয়ে দেওয়া হয়। এরপর দুই সহযোগীকে অদূরে পাহারায় রেখে আবু সালমান ভুক্তভোগীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে পাহারায় থাকা অপর দুজন ফের ধর্ষণের চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী চিৎকার শুরু করেন। পরে ওই নারীকে ফেলে রেখে চলে যায় তারা।
ভুক্তভোগী ভাড়া বাসায় ফিরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের ধর্ষণের ঘটনা জানান। এরপর পরিবারের সদস্যরা গত ২০ জুন ভুক্তভোগীকে সিলেট এমজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ২১ জুন ভুক্তভোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
সিলেটের জৈন্তাপুরে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে কৌশলে ডেকে নিয়ে দুই বন্ধুসহ গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে প্রাক্তন স্বামী ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার রাতে জৈন্তাপুর উপজেলার একটি হাওড়ে।
জৈন্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল বাশার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান জানান, রবিবার ভোরে এক সন্তানের জননী ত্রিশোর্ধ এক নারী অভিযোগ করেন। জৈন্তাপুর উপজেলার ফান্দু গ্রামের মৃত আব্দুল কালামের ছেলে মুমিনের সঙ্গে তার কয়েক বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের একটি সন্তান রয়েছে।
কিছুদিন আগে তালাক দিয়ে মুমিন আরেকটি বিয়ে করেন। শনিবার রাতে জরুরি কথা আছে বলে তাকে একটি নির্জন হাওড়ে ডেকে নিয়ে মুমিন ও তার দুই বন্ধু জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন।
ওসি জানান, অভিযোগ পেয়েই ছদ্মবেশে অভিযানে নামে জৈন্তাপুর থানা পুলিশের একটি টিম। প্রথমে দরবস্ত এলাকা থেকে প্রধান অভিযুক্ত মুমিনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মুমিনের বন্ধু বদরুলকে আটক করা হয়। আরও এক অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চলছে।
সিলেটের জালালাবাদ থানাধীন দুসকী আবাসিক এলাকা থেকে সাবনী সিকদার (১৫) নামের এক কিশোরী নিখোঁজ হয়েছেন। গত ২২ জুন রবিবার সকাল আনুমানিক ৩টার দিকে সে নিজ বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি বলে জানিয়েছে তার পরিবার। নিখোঁজ কিশোরীর পিতা মো. শামীম সিকদার এ ঘটনায় জালালাবাদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
শহীদ
