
সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় পান চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রান্তিক কৃষকেরা অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি লাভজনক হওয়ায় পান চাষে ঝুঁকছেন। এই অঞ্চলের উর্বর মাটি, অনুকূল জলবায়ু ও সেচ ব্যবস্থার কারণে পান চাষ ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে।
পান চাষে নারী-পুরুষ উভয়েই শ্রম দিচ্ছেন। অনেক নারী শ্রমিক পানের বরজে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। সকালে বরজে গিয়ে দুপুর পর্যন্ত কাজ করে তারা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পান।
কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ১২০ একর জমিতে পান চাষ হয়েছে। গত বছর এ উপজেলায় ৩ হাজার ৫৭৫ মেট্রিক টন পান উৎপাদন হয়েছিল। বাজারে পান বিক্রি হয় ৮০টি করে এক পোন হিসেবে। খুচরা বাজারে এক পোনের দাম ১০০ থেকে ১৩০ টাকা, আর পাইকারি দরে ৮০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চাহিদা বাড়লে এ দাম ১৬০ টাকা বা তারও বেশি হয়।
কালিগঞ্জের শুইলপুর গ্রামের বরজ মালিক শ্রী অনন্ত কুমার পাল বলেন, “এই বরজ আমার ঠাকুরদার সময় থেকে চলে আসছে। আমি তিন বিঘা জমিতে পান চাষ করি। একেক সিজনে খরচ হয় প্রায় ২ লাখ টাকা, লাভ হয় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এখানে নিয়মিত ৬-৭ জন শ্রমিক কাজ করে।”
স্থানীয় শ্রমিক সামছুর রহমান জানান, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বরজে কাজ করে মাসে ১০-১২ হাজার টাকা উপার্জন করেন তিনি। তার মতে, এলাকার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষই পান চাষ বা বরজের সঙ্গে জড়িত।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “পান সাতক্ষীরার একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। কৃষকেরা এ চাষে লাভবান হচ্ছেন। বিঘাপ্রতি লাভ হয় ১ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত।”
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিবৃষ্টির কারণে কিছু সমস্যা থাকলেও পান চাষ এখন অনেক কৃষকের জীবিকার প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে।
সজিব