ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

কী আছে পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের ভাগ্যে! কার্পেটের তলা থেকে বের হয়ে আসছে খেলাপির আসল চিত্র

প্রকাশিত: ১৮:৫২, ১৭ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৮:৫৪, ১৭ জুন ২০২৫

কী আছে পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের ভাগ্যে! কার্পেটের তলা থেকে বের হয়ে আসছে খেলাপির আসল চিত্র

ছবি: সংগৃহীত

দেশের তিনটি বেসরকারি ব্যাংকের অবস্থা বর্তমানে চরম নাজুক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক সম্পদের মান মূল্যায়ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এই তিন ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার ৯০ শতাংশেরও বেশি। গভীর সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর টিকে থাকার পথ খুঁজতে এখন একীভূতকরণের উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সম্প্রতি জানিয়েছেন, এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করে একটি নতুন কাঠামোর আওতায় আনা হবে। এ লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংকগুলো নিয়ে প্রথম ধাপে কাজ শুরু করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পাওয়া ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি ২০১৩ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে গত মে মাস পর্যন্ত ২৩ হাজার কোটি টাকার আমানতের বিপরীতে ঋণ দিয়েছে ২৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, অর্থাৎ ৯৮ শতাংশই এখন খেলাপি। বিশ্লেষকদের মতে, এই হার দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

 

 

ইউনিয়নের পাশাপাশি আরও দুটি ব্যাংকের অবস্থা মারাত্মকভাবে দুর্বল। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হার ৯৬ শতাংশ এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে ৯৫ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে সামান্য ভালো অবস্থানে রয়েছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) ও এক্সিম ব্যাংক, তবে তারাও ঝুঁকিমুক্ত নয়।

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, মাত্র এক বছরের ব্যবধানে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে সোয়া লাখ কোটি টাকার বেশি। এই অঙ্ক দেশের মোট বিতরণ করা ঋণের এক-চতুর্থাংশ।

এর মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা মন্দ ঋণ হিসেবে চিহ্নিত, যার আদায়ের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। শুধু মন্দ ঋণেই গত এক বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা।

 

 

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জানান, দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক খাতে যথাযথ তদারকি ও পর্যবেক্ষণের অভাব ছিল। রাজনৈতিক চাপের কারণে বিভিন্ন ব্যাংকের বোর্ড অবহেলিতভাবে বা যথাযথ যাচাই ছাড়াই বিপুল পরিমাণ ঋণ অনুমোদন দিয়েছে। ফলে খেলাপি ঋণ বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।

তিনি বলেন,“গত ১৫ বছর ধরে নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে একপাক্ষিকভাবে ঋণ বিতরণ হয়েছে। এখনো সময় আছে পরিস্থিতি মোকাবিলার, কিন্তু এর জন্য কঠোর আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে।”

 

চলতি বছরের মার্চ শেষে দেশের ব্যাংক খাতে প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। যা ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি সহনশীলতা এবং ঋণ পুনরুদ্ধার সক্ষমতার ওপর বড় ধাক্কা।

 

সূত্র:https://youtu.be/qz9-GPHvays?si=w4XPQOe6cnB28C5I

ছামিয়া

×