ছবিঃ সংগৃহীত
বগুড়ায় মেয়েকে বাল্যবিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে শাকিল মিয়া (৩২) নামে ওই কন্যার পিতাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত শাকিল মিয়া শহরের শিববাটি এলাকার বাসিন্দা এবং পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে শহরের ফুলবাড়ী জোড়াঘাট এলাকায়। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা পরিচয়ধারী জিতু নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, শাকিলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরী মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল অভিযুক্ত জিতু। মেয়েটি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় এবং বয়সের বড় ব্যবধান থাকায় প্রস্তাবটি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন শাকিল। এরপর থেকেই জিতু ও তার সহযোগীরা শাকিলকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। শনিবার বিকেলে পরিকল্পনা অনুযায়ী শিববাটি শাহী মসজিদ এলাকা থেকে কৌশলে ডেকে নেওয়া হয় শাকিলকে। পরে ফুলবাড়ী জোড়াঘাট এলাকার একটি নির্জন ঘরে নিয়ে তাকে নৃশংসভাবে পেটানো হয়। মৃত্যুর পর মরদেহ ফেলে পালিয়ে যায় ঘাতকরা।
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান বাসির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, “এটি পূর্ব শত্রুতার জের বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত জিতুসহ দুইজনক গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। হত্যার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।”
শাকিল মিয়ার নির্মম হত্যাকাণ্ডে এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবাদে স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এক প্রতিবেশী বলেন, “একজন বাবা তাঁর মেয়েকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন। এটা শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, এটা সামাজিক মূল্যবোধের ওপর সরাসরি আঘাত।”
এ হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হলো, বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এখনো অনেকের জীবনের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত তদন্ত ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন সচেতন মহল।
উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকেলে শহরের কাটনারপাড়া এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে বিদুৎ নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার ২৪ ঘন্টা পার না হতেই একই এলাকায় আবারো পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটলো।
আলীম
