ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

বসের খামখেয়ালি আচরণে হতাশ? এই টেকনিকগুলো আপনার মানসিক চাপ কমাবে

প্রকাশিত: ০৯:১২, ১৫ জুন ২০২৫

বসের খামখেয়ালি আচরণে হতাশ? এই টেকনিকগুলো আপনার মানসিক চাপ কমাবে

ছবি: সংগৃহীত

একজন সদয় ও সহযোগী বস পাওয়া কর্মজীবীদের জন্য একধরনের আশীর্বাদ। কিন্তু কর্মজীবনের পথে চলতে গিয়ে প্রায়শই এমন বসের মুখোমুখি হতে হয় যারা অত্যন্ত কঠোর, অহংকারী, সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চান বা আচরণে অপ্রত্যাশিত। এমন বস আপনার আত্মবিশ্বাস, কাজের সন্তুষ্টি এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেন। তবে এই কারণে চাকরি ছেড়ে দেওয়াটাই সবসময় সঠিক সমাধান নয়। বরং এমন বসকে কীভাবে দক্ষতার সঙ্গে সামলাতে হবে, তা শিখে পেশাদারিত্ব ও নিজস্ব সীমারেখা বজায় রেখে আপনি টিকে থাকতে পারেন, এমনকি ব্যক্তিগত ও পেশাগত বিকাশও ঘটাতে পারেন।

চলুন জেনে নিই, মানসিক ভারসাম্য না হারিয়ে কঠিন স্বভাবের বসকে সামলানোর ৫টি কার্যকর উপায়—

১. শান্ত থাকুন এবং পেশাদার আচরণ করুন

কঠিন বসের আচরণে আবেগতাড়িত হয়ে প্রতিক্রিয়া দেখানো সহজ, কিন্তু এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। বরং নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রেখে শান্ত ও পেশাদার আচরণ বজায় রাখুন। প্রতিক্রিয়া নয়—বিবেচিত প্রতিউত্তর দিন। এতে আপনি সুস্পষ্টভাবে ভাবার সুযোগ পাবেন এবং যুক্তিসঙ্গতভাবে সাড়া দিতে পারবেন। মনে রাখবেন, প্রকৃত পেশাদারিত্ব হলো নিজের আবেগ এমনভাবে পরিচালনা করা, যাতে আপনি নিয়ন্ত্রণে থাকেন—বসের খারাপ আচরণ নয়।

২. প্রত্যেকটি বিষয় নথিভুক্ত করুন

যদি আপনার বস নিয়মিত অন্যায় আচরণ করেন বা অনির্ভরযোগ্য হন, তাহলে তাদের সঙ্গে আপনার কথোপকথনগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখুন। কখন কী বলা হয়েছে, কীভাবে আপনি সাড়া দিয়েছেন—তারিখ ও সময়সহ সবকিছু লিখে রাখুন। ভবিষ্যতে এই তথ্যগুলো এইচআর বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করার দরকার হলে তা খুবই কাজে আসবে। তবে এসব নোট যেন আপনার ব্যক্তিগত ডিভাইসে থাকে, কোম্পানির সিস্টেমে নয়। এটি প্রতিশোধের জন্য নয়—বরং নিজের নিরাপত্তার জন্য বাস্তব তথ্য সুরক্ষায় রাখা।

৩. কী চান আপনার বস এবং কোন বিষয়গুলো তাকে উত্তেজিত করে তা বোঝার চেষ্টা করুন

বসের প্রত্যাশা বুঝতে পারলে আপনার কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে। খেয়াল করুন—ঠিক কোন বিষয় তার আচরণকে কঠিন করে তোলে? সময়মতো কাজ শেষ না হওয়া, নাকি পর্যাপ্ত আপডেট না পাওয়া? এসব বিষয় বুঝে নিয়ে নিজেকে সেই অনুযায়ী সামঞ্জস্য করুন। এর মানে এই নয় যে আপনাকে চাটুকার হতে হবে—বরং আপনি কৌশলীভাবে যোগাযোগ ও প্রত্যাশা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা এড়াতে পারবেন।

৪. সীমারেখা নির্ধারণ করুন, তবে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে

চাপ প্রয়োগকারী বা কর্তৃত্ববাদী বসের সঙ্গেও আপনার সুস্থ সীমারেখা থাকা দরকার। প্রতিটি অনুরোধে “হ্যাঁ” বলার প্রয়োজন নেই—বিশেষ করে যদি তা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। “না” বলতে শিখুন, তবে সেটা হোক পেশাদার এবং সম্মানজনকভাবে। এই অভ্যাস আপনাকে ভবিষ্যতে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ফেলা থেকে বাঁচাবে এবং অন্যদের শিখাবে কীভাবে আপনাকে সম্মানের সঙ্গে আচরণ করতে হয়।

৫. প্রয়োজনে বিকল্প খুঁজে দেখুন

যদি বসের আচরণ একেবারেই সহ্যসীমার বাইরে চলে যায়, তাহলে বিকল্প চাকরির খোঁজ নেওয়ার কথাও ভাবতে পারেন। মনে রাখবেন, মানসিক ও আবেগিক সুস্থতা এমন কোনো চাকরির চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ যা প্রতিনিয়ত আপনাকে নিঃশেষ করে দেয়।

আবির

×