
ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েল ইতিহাসের অন্যতম বড় সামরিক আঘাত হেনেছে ইরানের ওপর। এই হামলায় টার্গেট করা হয়েছে ইরানের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও চালিয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা—তবে আগের তুলনায় এখন অনেকটাই দুর্বল অবস্থানে রয়েছে তেহরান।
অতীতের অভিজ্ঞতা ও বর্তমান দুর্বলতা
১৯৮০-র দশকের ইরান-ইরাক যুদ্ধ ইরানকে শিখিয়েছে যুদ্ধকে নিজের ভুখণ্ড থেকে দূরে রাখার কৌশল। এজন্য তারা গড়ে তোলে প্রক্সি মিলিশিয়া—যেমন গাজায় হামাস, লেবাননে হিজবুল্লাহ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল এই প্রক্সিগুলোকেই নিষ্ক্রিয় বা ধ্বংস করে দিয়েছে। ফলে এবার সরাসরি ইরানকেই মাঠে নামতে হয়েছে।
ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রনির্ভর প্রতিরক্ষা
ইরানের কাছে বর্তমানে রয়েছে আনুমানিক ২০০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এসব ক্ষেপণাস্ত্র বিভিন্ন রেঞ্জে ইসরায়েলের ভেতর পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম। এছাড়া ইরানের কাছে রয়েছে স্বল্প খরচে তৈরি ক্রুজ মিসাইল ও ড্রোন, যা নিচু দিয়ে উড়ে রাডার ফাঁকি দিতে পারে। আগের হামলাগুলোতে ইরান এই সব অস্ত্র একযোগে নিক্ষেপ করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যস্ত রেখেছে।
কৌশলগত বাস্তবতা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান একসঙ্গে বিভিন্ন উচ্চতা ও গতির ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘স্যাচুরেট’ করতে চায়—যাতে অন্তত কিছু অস্ত্র প্রতিরক্ষা গুচ্ছ ভেদ করতে পারে। সম্প্রতি ইসরায়েলি ঘাঁটি ও তেল আবিব লক্ষ্য করে ইরান প্রায় ১৮০টি মিসাইল ছুড়েছিল, যার মধ্যে কিছু আঘাত হানতে সক্ষম হলেও বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি।
বিপদ বাড়াচ্ছে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের কিছু আবাসিক এলাকাও আক্রান্ত হয়েছে। জবাবে ইরান এবার তেল আবিব ও আশপাশের জনবসতিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যা প্রাণহানি বাড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। যদিও এসব হামলার কৌশলগত গুরুত্ব কম, তবে মানবিক দিক থেকে তা ভয়াবহ হতে পারে।
সংঘাত দীর্ঘ হলে চ্যালেঞ্জ আরও বড়
ইরানের যত ক্ষেপণাস্ত্রই থাকুক, প্রতিটি সফল হামলার জন্য তাকে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে হয়। এই হার বিবেচনায় তাদের অস্ত্র মজুদ দীর্ঘ মেয়াদি যুদ্ধে পর্যাপ্ত নয়। অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাও পুরোপুরি স্বনির্ভর নয়—সাম্প্রতিক হামলায় যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্রদের সহায়তায় ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বজায় রেখেছে।
আঁখি