
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাজমিন খাতুন (১৭) এর মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।
বুধবার রাতে মামলাটি দায়ের করেছেন নিহত তাজমিন খাতুনের বাবা, বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের করমচাঁদপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান।
মামলার আসামিরা হলেন—ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীরামকান্দি গ্রামের কামরুল মোল্লার ছেলে তামিম মোল্লা, খলিল মোল্লার ছেলে কামরুল মোল্লা, কামরুল মোল্লার স্ত্রী কুলসুম, এবং অজ্ঞাতনামা ২-৩ জন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, তাজমিন খাতুন ও তার স্বামী তামিম মোল্লা রাজধরপুর হাই স্কুলে দশম শ্রেণিতে একসঙ্গে পড়াশোনা করত। প্রায় এক মাস আগে তারা পরিবারের অজান্তে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করে। পরবর্তীতে উভয় পরিবার বিয়ে মেনে নেয়। তবে বিয়ের পর থেকেই তাজমিনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো।
গত ৮ জুন সকাল ৮টার দিকে তাকে মারধর করা হয়। তার বাবা তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সেখানে তার গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। সংসার টিকিয়ে রাখার আশায় মেয়েকে বুঝিয়ে আবার শ্বশুরবাড়ি রেখে আসেন।
ঈদের দাওয়াত খাওয়ার জন্য ৯ জুন সকালে বাবার বাড়ি আসার কথা ছিল, কিন্তু তা নিয়ে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির সঙ্গে বিরোধ হয়। তারা তাকে আত্মহত্যার জন্য উসকানিমূলক কথা বলে। ওই দিন দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজধরপুর (শ্রীরামকান্দি) গ্রামে শ্বশুরবাড়ির বসতঘরের পশ্চিম পাশের কক্ষে বৈদ্যুতিক সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
পরে দ্রুত বটি দিয়ে ওড়না কেটে তাকে খাটে নামানো হয়। তাদের ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে। অবস্থার অবনতি হলে স্বামী ও পরিবারের লোকজন তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়, যেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তারা লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। সদর থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ১০ জুন ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়। পরে মরদেহ বাবার বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।
বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ জামাল উদ্দিন বলেন, বুধবার রাতে নিহত তাজমিন খাতুনের বাবা আলিমুজ্জামান বাদী হয়ে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সজিব