ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঘূর্ণিঝড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৮০টি ঘর ভেঙে পড়েছে, বাসিন্দারা খুঁজছে নিরাপদ আশ্রয়

কামরুল আহসান সোহাগ, ইন্দুরকানী, পিরোজপুর

প্রকাশিত: ১৬:৫৫, ১১ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৬:৫৫, ১১ জুন ২০২৫

ঘূর্ণিঝড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ১৮০টি ঘর ভেঙে পড়েছে, বাসিন্দারা খুঁজছে নিরাপদ আশ্রয়

ছবি: সংগৃহীত

কোথাও দাঁড়িয়ে আছে কংক্রিটের কয়েকটি খুঁটি,আবার কোথাও টিনের চালা ক্ষয়ে পড়ে রয়েছে শুধুমাত্র ধ্বংসাবশেষ,কেউ কেউ আবার কোন রকমে পলিথিন দিয়ে নিজের ঘরটিকে রক্ষা করে টিকে আছে কোন মতে,আর টিকতে না পেরে ১৮০ টি পরিবারের মধ্যে অর্ধেকই চলে গেছে অন্যত্র। পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার সাঈদখালী চরের এ আশ্রয়ণ প্রকল্পের দৃশ্য এটি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গৃহহীন মানুষের আশ্রয়ের জন্য ২০০৬ সালে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার সাঈদখালী চড়ে ১৮০টি ঘর নির্মান করে বাংলাদেশ নৌ বাহিনী,তবে ২০০৭ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় সিডরে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঘরগুলো। এরপর আরও বেশ কয়েকটি বড় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ঘরগুলোর অবস্থা মারাত্মক ভাবে নাজুক হয়ে পড়ে। ঘরগুলোতে বসবাসকারীদের অধিকাংশই সাধারন মৎস্যজীবী ও দিনমজুর। এছাড়া এখানকার মানুষ বিভিন্ন এনজিওর ঋণে জর্জরিত। ফলে সংসারের খরচ মিটিয়ে তাদের পক্ষে নতুন করে ঘর নির্মান করা কিংবা সেগুলো মেরামত করা সম্ভব ছিলো না। ফলে এখানকার প্রায় ৮০টি পরিবার মাথাগুজতে ঠাঁই নিয়েছেন অন্যত্র।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিনসহ একাধিক বাসিন্দা জানান, শুকনো মৌসুমে তারা ঘরে থাকতে পারলেও বর্ষাকালে থাকা অসম্ভব। প্রতি বর্ষা মৌসুমে পলিথিন দিয়ে কোন রকমে ঘরে থাকেন তারা। সরকার জরুরী ভিত্তিতে মেরামতের উদ্যোগ না নিলে ঘর ছাড়া হবেন এ আশ্রয়ণ প্রকল্পের সকল বাসিন্দা। ফলে একদিকে যেমন বিপাকে পড়বেন তারা তেমনি বেদখল হবে এসব সরকারি সম্পত্তি।

ইন্দুরকানী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাসুদ সাঈদী জানান, বিগত সরকার আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্মস্থান হওয়ায় দীর্ঘ সতেরো বছরে সাঈদখালী চড়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো মেরামত করেননি। ঘরগুলো অতিদ্রুত মেরামত কিম্বা পূন:নির্মান না করা হলে পরিবারগুলো যেমন হবে ঘর ছাড়া তেমনি এ সকল সম্পদ বেদখল হয়ে যাবে ভুমি দস্যুদের হাতে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের উন্নয়ন শাখায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো সংস্কারের জন্য আবেদন করেছি। আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান-বিন-মুহাম্মাদ আলী জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো বেহাল দশা। এ ঘর গুলো পুনরায় নির্মানের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্ধ পাওয়া গেলে পুনঃনির্মান করা হবে।

আসিফ

×