
পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনে রাজধানী ঢাকা যেন পরিণত হয়েছে এক শান্ত নগরীতে। যেখানে প্রতিদিনের চিরচেনা যানজট, গাড়ির হর্ন, অফিসপাড়ার তাড়াহুড়ো আর কর্মব্যস্ততার শব্দ—সবই আজ অদৃশ্য! মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান এ ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে কয়েক লাখ মানুষ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা ছেড়েছেন।
এর ফলে শনিবার (৭ জুন) ঈদের দিন সকালে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো ছিল একেবারেই জনশূন্য। অলিগলি থেকেও হারিয়ে গেছে যান চলাচলের ব্যস্ততা। কোথাও নেই যানজট, নেই গা ঠেসে দাঁড়ানো বাস, নেই যাত্রাপথের ক্লান্তি।
সকালে সাতটায় ঈদের প্রথম জামাতের পর শুরু হয় পশু কোরবানির আনুষ্ঠানিকতা। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে চলছে পশু জবাই, মাংস কাটাকাটি ও তা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কাজ। ফলে দুপুরের পর থেকে কিছুটা পরিবহন চলাচল দেখা গেলেও, যাত্রী সংখ্যা ছিল হাতেগোনা।
উত্তরা, আজমপুর, বিমানবন্দর, আব্দুল্লাহপুর ও রাজলক্ষ্মী এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে—প্রধান সড়কে গাড়ির সংখ্যা খুবই কম। রিকশা, সিএনজি ও প্রাইভেট কার চললেও তেমন চাপ নেই। পথচারীর সংখ্যাও তুলনামূলকভাবে কম। তবে এই নিরব ঢাকা অনেক নগরবাসীর কাছে এক স্বস্তির অনুভূতি এনে দিয়েছে।
বাসযাত্রী কবির ভূঁইয়া বলেন, “বাসস্ট্যান্ডে এসেই বাস পেয়ে গেছি। গাজীপুর যাচ্ছি আত্মীয়ের বাড়িতে মাংস দিতে। বাসে কোনো ভিড় নেই, শুধু ঈদের দিন বলে দশ টাকা বকশিস চেয়েছে।”
সোহাগ পরিবহনের চালকের সহকারী জানান, “এইমাত্র গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি, কিন্তু রাস্তায় তেমন যাত্রী নেই। সবাই এখন পশু কোরবানিতে ব্যস্ত। বিকেলের দিকে যাত্রীর চাপ কিছুটা বাড়বে আশা করি।”
ঈদ উপলক্ষে নির্বাহী আদেশে সরকারি কর্মচারীদের জন্য টানা ১০ দিনের ছুটি থাকায় রাজধানীর বেশিরভাগ অফিসই বন্ধ। এতে ঢাকার চিরচেনা ব্যস্ততা একধরনের ‘ঈদ শূন্যতায়’ হারিয়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবশ্য প্রধান প্রধান মোড়ে ও সড়কে সক্রিয় রয়েছেন—নিরাপত্তা নিশ্চিতে।
মিমিয়া