
ছবিঃ দৈনিক জনকণ্ঠ
আগামী কাল পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদ উপলক্ষে কর্মস্থল থেকে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে গাইবান্ধার সড়কে। নাড়িরটানে ঘরমুখো মানুষের আনন্দ যাত্রায় ছিল শুধুই ভোগান্তি। তীব্র যানজটের কারনে অসুস্থ হয়ে পড়েছে অসংখ্য যাত্রী ।
শুধু রাজধানী থেকে গাইবান্ধা শহরে আসতে যেখানে সময় লাগার কথা ৬/৭ ঘন্টা সেখানে আজ সময় লাগছে ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত।
ঈদ যাত্রার সবচেয়ে বেশী যানজট তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে পলাশবাড়ী পর্যন্ত মাত্র ১৭ কিলোমিটার মহাসড়কে। ১৭ কিলোমিটারের এই রাস্তায় যেখানে ২০ মিনিটে পৌঁছার কথা সেখানেই সময় লাগতেছে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা।
যাত্রীরা বলছেন, অতিরিক্ত যানবাহন, মহাসড়কের পাশে বসা পশুর হাট, বৃষ্টিতে স্যাঁতসেঁতে রাস্তা এবং নির্মাণাধীন সড়কই এই দুর্ভোগের মূল কারণ।
এছাড়া ঢাকায়ও শুরু থেকেই জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা। কেউ কেউ জানান, রাজধানী ছাড়তেই তাদের সময় লেগেছে কয়েক ঘণ্টা।
গাজীপুর থেকে আসা যাত্রী মোঃ পারভেজ হোসেন বলেন, "গতকাল রাতে ৮টায় আশুলিয়া থেকে রওনা দিয়েছিলাম। আজ বেলা সাড়ে ৪টায় গাইবান্ধায় নেমেছি। সময় লেগেছে প্রায় ২০ ঘণ্টা।"
একই রকম অভিজ্ঞতার কথা জানান আজাহার নামে আরেক যাত্রী। তিনি বলেন, "মহাখালী থেকে গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাস ছাড়ে। সকাল ৭টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ পৌঁছাই। এরপর গোবিন্দগঞ্জ থেকে পলাশবাড়ী পর্যন্ত মাত্র ১৭ কিলোমিটার পথে ৫ ঘণ্টা আটকে ছিলাম। স্ত্রী আর ছোট বাচ্চাকে নিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।"
ভাড়া দ্বিগুণ নেওয়ার অভিযোগও এসেছে। ঢাকায় রাত ৯টায় বাসে উঠে গাইবান্ধা পৌঁছানো সুমনচন্দ্র বর্মণ বলেন, "১৫ ঘণ্টা লেগেছে। ভাড়া নিয়েছে ১ হাজার ১০০ টাকা, যা স্বাভাবিক সময়ের দ্বিগুণ।"
এ বিষয়ে গাইবান্ধা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আশরাফুল আলম বাদশা বলেন, "ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় ফিরতে এখন ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগছে। বিশেষ করে গোবিন্দগঞ্জ-পলাশবাড়ি অংশে দুর্ভোগ বেশি। অতিরিক্ত যাত্রী ও পণ্য পরিবহন, অস্থায়ী পশুর হাট, বৃষ্টির কারণে ভেজা রাস্তা এবং নির্মাণাধীন সড়কে জমে থাকা পানিই এই যানজটের প্রধান কারণ।"
গাইবান্ধা জেলা পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) জসিম উদ্দিন বলেন, "ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টি করছে অতিরিক্ত ব্যক্তিগত গাড়ি। মহাসড়কে তিন লেনের যানবাহন দুই লেনে চলায় জট তৈরি হচ্ছে। যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো যৌথভাবে কাজ করছে।"
পৃথী