
কথায় আছে আমরা মাছে-ভাতে বাঙালি। বাঙালির পাতে একবার ভাত না থাকলে চলেই না। আমরা বাঙালিরা একবেলা মাছ-ভাত ছাড়া যেন চলতেই পারি না। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে ভাত থাকা চাই। তবে ৩০ বছর ধরে ভাত খাননি এমন এক মানুষের খোঁজ পাওয়া গেছে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায়। ভাত না খাওয়া ব্যক্তির নাম তার আবির চাঁন। আবির চাঁনের বর্তমান বয়স ১০৪ বছর। পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার সাভার গ্রামে। স্থানীয়রা তাকে ‘রুটি আবির চাঁন’ বলে ডাকেন।
আবির চাঁন নামের ওই ব্যক্তির দাবি, জন্মের পর ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত ভাত খেয়েছেন তিনি। এরপর তিনি আর ভাত খাননি। ভাত খেলে তার বমি হয়। এভাবে ধীরে ধীরে ভাত খাওয়া বাদ দিয়ে দেন আবির চাঁন। কেউ দাওয়াত দিলে আগেই বলে দেন ভাত খাবেন না। জানা যায়, ১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করেন আবির চাঁন। পড়াশোনা করেছেন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। একসময় তিনি তাঁত শ্রমিকের কাজ করলেও বয়সের ভারে একন ক্লান্ত। তবে জীবনের শেষ অধ্যায়ে এসেও কোনোদিন ভাত খাননি তিনি। কোনো অনুষ্ঠানে গেলেও তিনি আগে জানিয়ে দেন তিনি ভাত খাবেন না। তার জন্য রুটি তৈরি করে রাখতে হবে।
আবির চাঁন বলেন, ছোটবেলায় স্বজনরা ভাত সামনে দিলেও খেতে মন চাইনি। তারপর ধীরে ধীরে ভাত খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এখন আমার বছয় প্রায় ১০৪ বছর। আমার তিনবেলার খাবারের পছন্দের তালিকায় রয়েছে রুটি, মাংস, মিষ্টি ও পরোটা। এখনো আমার সামনে কেউ ভাত খেলে আমি সরে যাই। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, আমি অনেক আগে থেকেই আবির চাঁনকে চিনি। সে জন্মের পরে কিছুদিন ভাল খেলেও প্রায় ৩০ বছর ধরে ভাত খায়নি। ভাত খেলে তার বমি হয়।
সে রুটি বেশি পছন্দ করে। বেশীরভাগ সময় রুটি ও বিস্কুট খায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মামুন-উর-রশিদ বলেন, একটা মানুষ ভাত না খেয়েও অন্য খাবার খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে। এটা কোনো সমস্যা নয়। আমাদের দেশের মানুষ ভাত বেশি খায়, ভাত শর্করা জাতীয় খাবার। শর্করা মানবদেশের শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে। মানুষ ভাতের বিকল্প যে কোন ধরণের শর্করা জাতীয় খাবার খেতে পারে।
রিফাত